জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকসুর নির্বাচিত জিএস ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিঞ্জানী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের যে তালিকা টাঙানো হয়েছিল সেখান থেকে তারা অধ্যাপক গোলাম আজমের নামকে মুছে দিয়েছে। সলিম উল্লাহ মুসলিম হল থেকে মুসলিম শব্দটা তারা মুছে দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রামে ইকরা ছিল সেই ইকরা আরবী শব্দটিও তারা সহ্য করতে পারেনি। আল্লাহর তরফ থেকে প্রথম যে ওহি এসেছে তা হলো ইকরা। কোরানের এই শব্দকেও তারা বাদ দিয়ে দিয়েছে। যেখানে ইসলাম সেখানে আওয়ামীলীগ থাকে না। যেখানে গনতন্ত্র সেখানে আওয়ামীলীঘ থাকে না। শেখ মুজিবুর রহমান আকাশচুম্বি জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। কিন্তু মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে এমন কুকর্ম করেছে, সাড়ে তিন বছরের মাথায় ইতিহাসের বড় ট্র্রেজেটির মাধ্যমে তাকে বিদায় গ্রহণ করতে হয়েছে। তিনি বাকশাল কায়েম করে সকল পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে চারটি পত্রিকা রেখেছিলেন। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের হ্নদয়ের ভাষা বুঝেনি। সাড়ে পনেরো বছর এক নেত্রির নির্দেশে শাসন করেছেন। অধিকাংশ নাগরিকদের তিনি তার দাসে পরিণত করেছিলেন।শেখ হাসিনা ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্বৈরাচার। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দেশে একটি সাময়িক পরিবর্তন হয়েছে। একে স্থায়ী রুপ দিতে হলে প্রয়োজন সৎ লোকের শাসন ও আল্লাহর আইন। নতুন বাংলাদেশে পুরাতন কাউকেই ক্ষমতায় দেখতে চাই না। আমরা কাজের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রকৃত ভালোবাসা অর্জন করতে চাই। বিগত ১৬ বছর কেমন ছিলো বাংলাদেশ, জামায়াত-শিবিরসহ এদেশের জনগণ তার স্বাক্ষী। এমন দেশ তো কেউ চাইনি। ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ দেশ শাসন করলেও তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। যে কারণে তারা দেশ ও জনগণের কল্যাণে কোন কাজ করেনি। কোটি কোটি ডলার আওয়ামূ লুটেরারা লুট করেছে। এ দেশের মেহনতি মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স তারা লুট করেছে। ব্যাংকগুলো অর্থশূন্য হয়ে পড়েছে। কোন ব্যাংক গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছে না। আগামী দিনে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য জামায়াত কর্মীদের উন্নত চরিত্র দিয়ে সমাজে গণভিত্তি রচনা করতে হবে। সংগঠনের অভ্যন্তরে সুন্দর জান্নাতি পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য আনুগত্য, পরামর্শ ও এহতেসাবের চর্চা সকল স্তরে যথাযথভাবে প্রচলন রাখতে হবে। আমাদের আনুগত্যের মূল ভিত্তি হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি। কোনো ব্যক্তিকে খুশি করার জন্য আমাদের আনুগত্য নয়। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) থাইংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিকেল ৫টায় পালংখালী জামায়াত কর্তৃক আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পালংখালী ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর আবুল আলা রোমানের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে আরও আলোচনা পেশ করেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী, কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারী জাহেদুল ইসলাম খন্দকার, উখিয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল ফজল, মাওলানা নুরুল হক, উপজেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুর রহিম, মাওলানা আব্দুল করিম,মাওলানা মনসুর আলম,মাস্টার খাইুিল বশর, শ্রমিক নেতা মুহাম্মদ শাহজাহান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এ দেশে সুশাসন কায়েম করতে যোগ্য লোক তৈরি করছে। এ দেশে আল্লাহর আইন কায়েম করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিগত আওয়া সরকার দেশে জামায়াত-শিবিরের শত শত নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। হত্যা করেছে বৈষম্যবিরোধী নিরহ ছাত্রদের। ছাত্র হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। নির্বাচনের আগপর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সমর্থকদের সবার সঙ্গে সুন্দর আচরণ দিয়ে মুগ্ধ করতে হবে।