ইসলামের ইতিহাসে হিজরত যুগান্তকারী ঘটনা। বৈশ্বিক ইতিহাসেও হিজরত তাৎপর্যবহ ও সুদূরপ্রসারী ঘটনা। জোসেফ হেল বলেছেন, ‘হিজরত বিশ্ব নবীর জীবন ও কর্মে নতুন গতিপথ তৈরি করে। ইসলামের ইতিহাসে বৃহৎ দিগন্ত উন্মোচন করে। এটি দ্বীন ও মানবতার বৃহত্তম স্বার্থে ত্যাগ, বিসর্জনের এক সাহসী পদক্ষেপ।’
মহানবী (সা.) মদিনায় হিজরত করেছিলেন। ১৪ শত বছর আগের সেই পথ আবিষ্কৃত হয়েছে। সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও রিহলাত মুহাজির’ নামের একটি সংস্থা ওই পথটিকে মদিনায় যাওয়ার পথে নথিভূক্ত করতে কাজ করছে। এছাড়াও পর্যটকদের অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করতে মক্কায় দ্য জাবালে সাওর কালচারাল সেন্টার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
জানা গেছে, সংস্কৃতি ও জাদুঘর বিষয়ক সামায়া ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি মহানবী (সা.)-এর জীবনী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে কাজ করছে। কোম্পানির প্রধান নির্বাহি ফাওয়াজ মেরহেজ সংবাদমাধ্যমকে জানান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বায়বীয় ডকুমেন্টেশন ও প্যানোরামিক ৩৬০ ডিগ্রি ফটোগ্রাফি ব্যবহার করে মহানবী (সা.)-এর হিজরতের পথ নথিভূক্ত করতে ‘মুহাজির’ নামের উদ্যেগের কাজ চলছে। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর এ উদ্যোগের প্রথম পর্ব উদ্বোধন হয়।
তিনি আরও বলেন, মক্কা নগরীর সাওর পর্বতের গুহা থেকে শুরু করে ৪০টি স্টেশন অতিক্রম করে মদিনার মসজিদে কুবা পর্যন্ত পথ নির্ধারণ করা হয়। দ্য জাবাল সাওর কালচারাল সেন্টারে মহানবী (সা.)-এর হিজরতের ঘটনা উপস্থাপনের চিন্তা থেকে হিজরতের পথ নথিভুক্ত করার ধারণাটি আসে।
তিনি জানান, মহানবীর (সা.)-এর হিজরতের পথ প্রধানত প্যানোরামিক ৩৬০ ডিগ্রি ফটোগ্রাফি ব্যবহার করে দীর্ঘ এ পথ নথিভূক্ত করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে এসব স্থানে ফোর কে ড্রোন ব্যবহার করে ডিজিটালভাবে এ পথ নথিভূক্ত করা হবে। পথ নথিভূক্তির সময় এবড়োথেবড়ো রাস্তাঘাট ও সময়ের পরিক্রমায় ঐতিহাসিক স্থানের নাম পরিবর্তন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
পথ অনুসন্ধানে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন ইসলামের ইতিহাস ও মহানবী (সা.)-এর জীবনী বিষয়ক একটি বিশেষজ্ঞ দল। তাদের মধ্যে আছেন, মক্কার উম্ম আল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ইসলামী সভ্যতা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ বিন সামিল আল সালামি ও অধ্যাপক সাদ বিন মুসা আল মুসা। রিয়াদের ইমাম মুহাম্মদ বিন সাউদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের অধ্যাপক ও এটলাস বায়োগ্রাফি অব প্রফেট-এর সাইন্টিফিক কমিটির সদস্য সুলাইমান বিন আবদুল্লাহ আল-সুওয়াইকেত ও অধ্যাপক আবদুল আজিজ বিন ইবরাহিম আল উমারি। এছাড়াও মদিনা নগরী ও মহানবী (সা.)-এর জীবনী বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ বিন মুস্তাফা আল শানকিতিও এ প্রকল্পে নানাভাবে সংযুক্ত আছেন