শামীম ইকবাল চৌধুরী,নাইক্ষ্যংছড়ি::
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের বাকঁখালী মৌজা থেকে গত শনিবার অপহৃত দুই তামাক চাষী ৭২ ঘন্টা পর অপহৃতদের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তাদেরকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাকঁখালী মৌজার গহীণ অরণ্যে ৩লাখ টাকা মুক্তিপন আদায় করে অক্ষত অবস্থায় ছেড়ে দেয় উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের বাকঁখালী মৌজার হাতিরঝিরি নামক এলাকা থেকে তামাক চাষী আলী আহমদ (৬২), শামসুল আলম (৩০) ও আবদুল্লাহকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় আট সদস্যসের উপজাতীয় সন্ত্রাসী দল। পরদিন ভোররাতে অপহরণকারী চক্রের কবল থেকে কৌশলে পালিয়ে আসে আবদুল্লাহ। পরে অন্যদের পরিবার থেকে ৪লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে অপহৃতদের উদ্ধারে গত সোমবার (১৯ সেপ্টম্বার) বিকালে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ৩১ বিজিবির নায়েক সুবেদার আলমগীরের নেতৃত্বে অভিযানে নামে বিজিবি সদস্যরা।
অপহৃত আলী আহমদ ও শামসুল আলম সাংবাদিকদের জানান- অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা তাদের অত্যাচারের মাধ্যমে মুক্তিপন দিতে তাঁদের পরিবারকে বাধ্য করে। পরে অপহরণকারীদের কথা মত ৩লাখ টাকা মুক্তিপন পরিশোধ করার পর ছেড়ে দেয়। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় দূর্গম এলাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়ার পর বিকাল ৪টায় নিজ বাড়িতে পৌছে তারা। গতকাল সন্ধ্যায় নাইক্ষ্যংছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদ কবির, এসআই কাজী সোলতান উদ্দিন আহসান, এসআই শামীম মুক্তি পাওয়া আলী আহমদ ও শামসুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এদিকে সম্প্রতি সময়ে বাইশারী-ঈদগড়-ঈদগাও-গর্জনিয়া এলাকায় আশঙ্কাজনক ভাবে বেড়েছে অপহরণের ঘটনা। অপহরণকারী চক্রটি নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। ইতিপূর্বে সংঘটিত ঘটনার পর পর আইন শৃংখলা বাহিনীর অভিযানের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেলেও গত দুটি অপহরণের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা ছিল ভিন্ন। সন্ত্রাসীদল অপহরণের পর পর অপহৃত পরিবারকে আইন শৃংখলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণে রাখার চাপ প্রয়োগ করে। অন্যথায় অপহৃত ব্যাক্তিদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আবু মুসা জানান- ভৌগলিক ভাবে অপহরণের ঘটনাস্থল খুবই দুর্গম। ঘটনার পর পর অপহরণকারীরা গহীণ অরণ্যে আত্মগোপন করে। যার কারণে দুর্গম এলাকায় অভিযান করতে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের একটি বিষয় থাকে। এছাড়াও অপহৃত পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করা হয় যে, অপহৃতকে জীবিত উদ্ধার করতে প্রশাসনের নিরবতা পালন করতে।