শামীম ইকবাল,চৌধুরী,নাইক্ষ্যংছড়ি::
বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণার পর পরেই সবার দৃষ্টি এ ছাত্র সংগঠনটির শীর্ষ দুটি পদের নেতৃত্বে কারা আসছেন ? এ প্রশ্ন এখন শুধু দলীয় নেতাকর্মীই নয়, জেলা উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনেও ছড়িয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে কে আসছেন এ নিয়ে সর্বত্র আলোচনা চলছে। নেতাকর্মীদের মধ্যেও চলছে নানা জল্পনা কল্পনা, কারো আগ্রহের কমতি নেই। কে হতে পারেন মতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। তৃণমূলের স্কুল,কলেজসহ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও তাকিয়ে আছেন নতুন নেতৃত্বের দিকে।
এদিকে অর্ধডজনখানেক সম্ভাব্য নিয়মিত মেধাবী ছাত্রদের মাঝে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে ছাত্ররা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ফাইল করে জেলায় জমা দেওয়ার জন্য রাত দিন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ।
জেলা ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, কাঙ্খিত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শহীদুল আলম সোহেলের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্যেøখ করে আগামী ১৩ নভেম্বারের মধ্যে সভাপতি কাউছার সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জনী সুশীলের বরাবরে শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ শিক্ষা প্রতিষ্টানের প্রত্যায়ন, ছবি ও জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার জন্য অনুরুধ জানান। তবে এখনও (১২ নভেম্বার) কারও জীবন বৃত্তান্তসহ যাবতীয় কাগজ পত্র জেলায় জমা হয়নি।
উপজেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানাযায়, ২০১৪ সালের জুন মাসের সাবেকসভাপতি রাশেদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সুজন চৌধুরী সঞ্জয় স্বাক্ষরিত ছোট আকারে ২০সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর পর ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও এই বিলুপ্ত করা কমিটি ২ বৎসর ৫ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটির রূপ নিতে পারেনি। নতুন কমিটিতে সভাপতি- সম্পাদক যোগ্যতা,মেধা ও সংগঠক ব্যক্তিত্বকে যাছায় বাছাইয়ের ভিত্তিতে মনোনীত করা হবে জেলা উপজেলার র্শীষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা।
আর ওদিকে জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের ‘গুড বুকে’ স্থান পেতে আশপাশে নানা চেষ্টা তদবীর করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। কাঙ্খিত পদ পেতে শেষ মুহুর্তের চেষ্টারও কমতি ছিল না কারোরই। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকলেও ছাত্রত্ব ও বয়স বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কঠোর নির্দেশনা থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন অনেকে। যোগ্যতা ও সংগঠক ব্যক্তিত্বের মূল্যায়নের কমিটি হলে, চোখ দেখা এবং স্বজনপ্রীতি নেতৃত্বের হিসাব-নিকাষ পাল্টে যেতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে উপজাতি-বাঙ্গালী মিলামিল রেখে কমিটি গঠন করতে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সমঝোতার মাধ্যমে সভাপতি- সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার জন্য দৌড়ে এগিয়ে আছেন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইব্রাহীম খলিল, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি উবা চিং মার্মা, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুল্লাহ কবির বিন্দু, নাইক্ষ্যংছড়ি এমএ কালাম ডিগ্রী কলেজের সাবেক সভাপতি মোঃ ফরিদ উল্লাহ, সাবেক সহ সভাপতি আহম্মেদ রিয়ান প্রমুখ। তবে এদের মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠক ও মেধাবী ছাত্র হিসেবে সভাপতি সম্পাদক পদে নাম উঠে আসছে সাবেক সংগঠনিক স¤দক মোঃ ইব্রাহীম খলিল ও সাবেক উপজেলা সহ সভাপতি উবাচিং মার্মা ও সাবেক ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুল্লাহ কবির বিন্দুর নাম।এদের মাঝে মেধাবী, ত্যাগী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী এবং স্বচ্ছ ভাবমর্যাদার নেতার গুণ রয়েছে বলে উপজেলার সর্বত্র ছাত্রলীগের নেতা- কর্মীদের দাবী।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাউছার সোহাগ জানান, জেলা উপজেলা আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড, ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে। তবে কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করাতেই কোন ধরনের কাউন্সিলের আয়োজন হবে না। কমিটি গঠন গঠনতন্ত্র মেনেই করা হবে। এখানে কে বাদ পড়ল আর কে থাকলো সেটা মুখ্য নয়। তবে ছাত্রলীগে কোন অছাত্র, মাদকাসক্ত ও চাঁদাবাজদের স্থান দেয়া হবে না বলে দাবী করে সমঝোতার মাধ্যমে একটি শক্ত কমিটি উপহার দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।
অপরদিকে ছাত্রত্বের মেধাবী, ত্যাগী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী এবং স্বচ্ছ ভাবমর্যাদার নেতাদের মধ্যে থেকে নেতা নির্বাচন করতে সাবেক কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর (উশৈসিং )এমপি জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ও ছাত্রলীগর নেতৃবৃন্দদেরকে পরামর্শ দেন। তাই উল্লেখিতদের মধ্য থেকে যে কেউই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পাবেন বলে সংগঠনটির জেলার দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৭ নভেম্বার) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বান্দরবান জেলা শাখার কার্যনির্বাহী কমিটি এক জরুরী সভাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগ সংগঠনকে আরও গতিশীল ও নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষে সভাতি চো চু মং মার্মা ও সাধারণ সম্পাদক বদরুল্লাহ কবির বিন্দুর কমিটি বিলুপ্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাতে সভার উপস্থিতির সর্ব সম্মতিক্রমে কমিটি বিলুপ্তি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।