টাঙ্গাইলের নাগরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপিসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ওই কলেজের এক নারী প্রভাষককে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় উপজেলা শহরের বাজারে কেনাকাটা করাকালে ওই প্রভাষক এ ঘটনার শিকার হন।
পরে শুক্রবার সকালে থানায় ওই প্রভাষকের করা মামলায় বাবু নামে এক ছাত্রলীগকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন, নাগরপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাদিকুর রহমান বিপ্লব।
প্রভাষকের অভিযোগে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ বেতারের উপ-স্টেশন প্রকৌশলী আর অস্টেলিয়ায় পিএইচডিরত মো. এমদাদ হোসেনের স্ত্রী শামীমা ইয়াসমিন। ২০১৭ সালের ২ মে নাগরপুর সরকারি কলেজে রসায়ন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি উপজেলার প্রমোট শিক্ষক হোস্টেলে ৬ বছরের একমাত্র ছেলে আর এক রুমমেট নিয়ে বসবাস করছেন। বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসে আতঙ্কে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে তিনি ওই বাজারের বাঁশআলী নামের এক মুদি দোকান ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনেন। এরপর তিনি পাশের একটি দোকানে যান। তবে ওই দোকানে এ সময় কাউকে না দেখে তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। হঠাৎ মোটরসাইকেল নিয়ে মামুন নামে ওই দোকানে প্রবেশ করেন। এ সময় প্রভাষক তাকে জিজ্ঞাসা করেন এখানে কি চশমা সারানো হয়? তবে ওই যুবক তার কথার সঠিক উত্তর না দিয়ে বলেন এটা কি চশমা সারানোর দোকান মনে হচ্ছে। এ কথায় প্রভাষক বলেন, এভাবে কথা বলছেন কেন, আমি এ এলাকার বাসিন্দা নয় আর আমি নাগরপুর কলেজের প্রভাষক। এ পরিচয় পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই যুবক বলেন, আপনি কি আমাকে চেনেন। এর এক পর্যায়ে বাবু ও বিপ্লব এগিয়ে এসে মামুনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শিক্ষিকাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, মারতে উদ্যত হয় এবং টান দিয়ে মুখের হিজাব খুলে ফেলে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষিকা শামীম ইয়াসমিন বলেন, যেখানে আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও নিরাপদ নই তাহলে সাধারণ মেয়েদের অবস্থার কথা একবার চিন্তা করুন। আর আমি এজন্যই এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজের সাবেক ভিপি আল-মামুন জাগো নিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক এ মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নাগরপুর থানা পুলিশেরর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, নাগরপুর সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক শামীমা ইয়াসমিন শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনে সাবেক ভিপি মামুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।