টেকনাফ প্রতিনিধি::
টেকনাফ বাহারছড়ার উত্তর শীলখালীর পশ্চিমে সমুদ্র পাড়ে মাছ শিকার করতে গিয়ে সমুদ্রে ভেসে আসা বস্তাসহ বিপুল পরিমান ইয়াবা কুড়িয়ে পেয়েছে স্থানীয় এক জেলে। উক্ত জেলে স্থানীয় উত্তর শীলখালীর কাদের হোসনের ছেলে আবদু রহমান (প্রকাশ হউসসা) বলে জানা গেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে আবদু রহমান প্রধানত সমুদ্রে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে, তাই প্রতিদিনের ন্যায় তিনি গত ১ জুলাই (শনিবার) দুপুরের সময় সমুদ্রে মাছ শিকার করতে জান, কিন্তু ভাগ্যক্রমে বিকালের নাগাদ তিনি মাছ শিকারের সময় তীরে ভেসে আসা একটি মাঝারি সাইজের প্লাষ্ট্রিকের মোড়ানো বস্তা দেখতে পান, পরে তিনি বস্তার ভেতরে খুলে দেখলে বস্তার সব গুলো ইয়াবা দেখতে পান, তারপর তার সাথে থাকা আরেক বৃদ্ধ জেলে স্থানীয় আপলতনের ছেলে দলাইয়া তার কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করে যে এই গুলো কি, কিন্তু চালাক জেলে আবদু রহমান বলে এগুলো চকলেটের প্যাকেট, তাহলে আমাকে এক প্যাকেট দাও বলে তিনি প্লাষ্ট্রিকের মোড়ানো একটি প্যাকেট নিয়ে নেন, পরে বৃদ্ধে জেলে বাড়ি এসে প্যাকেটটি খুললে সেখানে ভেজা অবস্থায় সব গুলো ইয়াবা দেখতে পান, এতে তিনি ভয় পেয়ে এলাকার মধ্যে উক্ত ঘটনার বর্ণনা দেন, এবং ইয়াবার প্যাকেটটি স্থানীয় ইউপি সদস্য সোনা আলীকে জমা দেন পুলিশকে দেওয়ার জন্য, পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে মেম্বার সোনা আলী ও এলাকার মান্যগন্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে ভেজা ইয়াবা গুলো পুলিশকে হস্তান্তর করেন এবং বৃদ্ধ জেলে পুলিশকে উক্ত ঘটনা খুলে বলেন, তারপর বাকি ইয়াবা উদ্ধারের জন্য পুলিশ আবদু রহমানের সাথে যোগাযোগের জন্য তার বাড়িতে গেলেও সে পুলিশের সামনে আসেনি, এমন কি তার কোনো ভাইও পুলিশের সামনে আসেনি বলে এলাকাবাসীরা জানান। এদিকে ইয়াবা গুলো নিয়ে বাহারছড়ায় চলছে নানান কথাবার্তা, কেউ বলছে ইয়াবার পরিমান ৫ লাখ হবে, কেউ বলছে ৩ লাখ হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আর ইয়াবা গুলো নিয়ে সত্য অনুসদ্ধানের জন্য এই প্রতিবেদক আবদু রহমানের বাড়ি ও এলাকাতে গেলে বাড়িতে আবদু রহমান সহ তার পরিবারের পূরুষ সদস্য কাউকে না পেয়ে কথা হয় তার আত্নীয় অনেক এলাকাবাসীর সাথে, তারা সবাই উক্ত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এদিকে উক্ত ঘটনা পারিবারিক ভাবে জানার জন্য পরে আবদু রহমানের ভাই কালুর মোবাইল নাম্বার ০১৮৫৬৭৩৩৩১৮ ফোন দিলে কালুর স্ত্রী ফোন রিসিভ করেন, পরে কুড়িয়ে পাওয়া ইয়াবার ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে কালুর স্ত্রী বলেন, ইয়াবার বস্তা পাইছে সত্য, তবে জিনিস গুলো সেখানে পাইছে আবার সেখানে ভেসে দিছে, আমরা একটিও রাখি নাই। তার স্বামী বর্তমানে কোথাই জানতে চাইলে তিনি বলেন মাছ শিকার করতে গেছে, তার স্বামী আবদু রহমানের সাথে এই ইয়াবা গোপন করার ব্যাপারে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার স্বামী অন্ধ মানুষ তিনি কখনো এগুলো দেখবেনা, তাহলে তিনি অন্ধ হলে কিভাবে মাছ শিকার করতে গেছেন প্রশ্ন করলে তিনি আমতা আমতা করতে করতে উত্তর দেয়নি। অন্য দিকে কালু ছাড়া এই ব্যাপার নিয়ে এলাকা থেকে আরো পালাতক রয়েছে আবদু রহমানের আরো দুই ভাই শাকের ও লালু। আর আবদু রহমানের সাথে যোগাযোগের জন্য তার ফোন নাম্বার খোঁজলেও তিনি নিয়মিত ফোন ব্যবহার না করায় এলাকার কারো কাছ থেকে ফোন নাম্বার পাওয়া যায়নি, এমনকি আবদু রহমানের ভাবী কালুর স্ত্রী থেকেও তার ফোন নাম্বার পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য সোনা আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান বৃদ্ধ জেলে দলাইয়া আমাকে যে ইয়াবার প্যাকেটটি জমা দিয়েছিল তা আমি সবার সামনে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে হস্তান্তর করেছি, তবে আবদু রহমান থেকে এখনো বাকি ইয়াবা গুলো উদ্ধার হয়েছে কিনা শুনি নাই। অন্য দিকে এই ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দীন খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান বৃদ্ধ এক জেলে আমাদেরকে ভাঙ্গা ও ভেজা অবস্থায় কিছু ইয়াবা হস্তান্তর করেছে, তবে এর সংখ্যা বলা যাচ্ছেনা কারণ ইয়াবা গুলো সম্পুর্ন গুঁড়ি হয়ে গেছে, আর আবদু রহমানের ব্যাপারে ওসি বলেন আমরা সত্যটা বের করার জন্য এখনো চেষ্টায় অব্যাহত আছি।