প্রতিবছরই ঘটা করে পবিত্র কাবাঘর ধোয়ার উৎসব পালন করা হয়। এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সৌদি ও মসজিদুল হারাম কর্তৃপক্ষের নিয়মরীতি। এতে সৌদি বাদশাহ কিংবা তার প্রতিনিধি, স্থানীয় গভর্নর, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেন। মূলত কাবাঘর পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ হজরত মুহম্মদ (স)-এর একটি আদর্শ। মক্কা বিজয়ের দিন তিনি সাহাবায়ে কেরামদের সঙ্গে নিয়ে কাবাঘরে প্রবেশ করে বাহ্যিক ও মৌলিকভাবে কাবাঘরের পরিশুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।
নবী করিম (স)-এর সেই কাজের অনুসরণে পবিত্র কাবা ধোয়ার এ কাজটি একটি বড় উৎসব হিসেবে পালন করা হয়। কারণ কোরআন ও হাদিসে বায়তুল্লাহর মর্যাদা দান, একে পবিত্র রাখা ও পরিশুদ্ধ করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং আমার ঘরকে পবিত্র রাখ তাওয়াফকারীদের জন্য, নামাজে দ-ায়মানদের জন্য এবং রুকু-সেজদাকারীদের জন্য।’ (সুরা হজ : ২৬)
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় চলতি বছর প্রথমবারের মতো পবিত্র কাবাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করা হয়। এ কাজে সৌদি বাদশাহ সালমানের পক্ষে মক্কা নগরীর গভর্নর প্রিন্স খালিদ আল ফয়সাল নেতৃত্ব দেন। তিনি কাবা শরিফের প্রধান ইমাম শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস, মক্কার ডেপুটি গভর্নর প্রিন্স বদর বিন সুলতান, স্পেশাল ইমারর্জেন্সি ফোর্সের কমান্ডার ও হজ সিকিউরিটি ফোর্সের কমান্ডার, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও গুরুত্বপূর্ণ
ব্যক্তিদের নিয়ে কাবা চত্বরে আসেন। আগে থেকেই কাবার গায়ে বিশেষ সিঁড়ি লাগানো ছিল। এর পর সবাই পবিত্র ওই ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা পবিত্র জমজমের পানির সঙ্গে গোলাপ, উন্নতমানের সুগন্ধি উদ ও কস্তুরি মিশ্রিত পানি দিয়ে করেন ধোয়ামোছার কাজ। বের হয়ে তারা হাজরে আসওয়াদে (কালো পাথর) চুম্বন করেন। অতঃপর কাবা তাওয়াফ করে মাকামে ইব্রাহিমে নামাজ আদায় করেন। কাবা শরিফ ধোয়ার সময় দুই ঘণ্টা দরজা খোলা থাকে। এ সময় চারদিকে বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের কয়েক স্তরের নিরাপত্তাবলয় তৈরি করে রাখতে দেখা যায়। উপস্থিত তাওয়াফকারীরা এ সময় আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিয়ে কাজে উৎসাহ দিয়ে থাকেন। মহরম মাসে পবিত্র কাবা ধোয়া হলেও আরাফার দিন (৯ জিলহজ) বদলানো হয় স্বর্ণখচিত গিলাফ।
পাঠকের মতামত