তদন্তে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফেরত পাঠানো উচিত বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা।
সীমান্তে অস্থিরতা তৈরির কূটকৌশল হিসেবে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর গুপ্তচর থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের। আশ্রিতদের কেউ সন্ত্রাসী দলের সদস্য হলে—তা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে বলেও শঙ্কা বিশ্লেষকদের।
মিয়ানমার সামরিক জান্তার নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সময় পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এবার আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে মিয়ানমারের ৩ শ এর বেশি সীমান্তরক্ষী।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গা নিধনে যারা অংশ নিয়েছিল পালিয়ে আসাদের মধ্যে তারাও থাকতে পারে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, আশ্রিতদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্থিরতা সৃষ্টি কিংবা বাংলাদেশে গুপ্তচরবৃত্তি করছে কি না—তা খতিয়ে দেখতে হবে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক এয়ার কমডোর (অব.) ইসফাক ইলাহি চৌধুরী বলেন, গুপ্তচরই হোক আর পালিয়ে আসা সৈনিকই হোক বা যুদ্ধাপরাধ করেছে এমন ক্যারেক্টারই হোক—এদের আপাতত আইসোলেট করে তারপর ধীরে সুস্থে আমরা এর তদন্ত করে বের করব।
ইসফাক ইলাহী বলেন, তাদের ফেরত না পাঠিয়ে এখানে ডিটেনশনে রাখা উচিত। কারণ, এই বাহিনীটা মিয়ানমারে গণহত্যার জন্য দায়ী।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, রোহিঙ্গা গণহত্যা এবং জাতিগত নিধনে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিচারে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতের সহায়তাও চাইতে পারে বাংলাদেশ।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেন, জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী এদের যারা অস্ত্রধারী সৈনিক বা যারা এসেছে তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে আইসিআরসি’র একটা ভূমিকা আছে। আইসিআরসিকে সম্পৃক্ত করেও এটি করা যেতে পারে, তাহলে এটি একটি আন্তর্জাতিক রূপ পাবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আইসিসি যদি বলে এই ৩৩০ জনের মধ্যে আমরা নাম দেখছি যারা আমাদের তালিকায়ও আছে তখন একটা বিষয় হতে পারে যে, তারা যদি অনুরোধ করে যে, এই দুজনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই সেটা তো হতে পারে।
অস্ত্রসহ পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যদের কেউ সন্ত্রাসী দলের সদস্য হলে—তা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাঠকের মতামত