উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮/০৮/২০২৩ ১০:২৯ এএম , আপডেট: ১৮/০৮/২০২৩ ১০:৪০ এএম
চকরিয়া পৌর শহরের বায়তুশ শরফ সড়কের মুখে অস্ত্র হাতে ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বেলাল উদ্দিন (লাল হেলমেট পরা)। পেছনে লাঠিসোঁটা হাতে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় কক্সবাজারের ছয় মামলায় একজনকেও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। চকরিয়ার সংঘাতের সময় হাতে ভারী অস্ত্র থাকা কাউকে শনাক্তও করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মামলাগুলোর মধ্যে চকরিয়া এবং পেকুয়ায় হওয়ায় চারটি এজাহারে স্থানীয় চার সাংবাদিক ও সৌদি আরবে অবস্থানরত এক প্রবাসীকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ বলছেন, নানাভাবে ঘটনায় জড়িত রয়েছে বলে শনাক্ত হওয়ায় তাদের আসামি করা হয়।

গত মঙ্গলবার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার সদর, চকরিয়া ও পেকুয়ায় সংঘর্ষ হয়। চকরিয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহতসহ অনেকেই আহত হন। ওইদিন চকরিয়ার সংঘর্ষের ঘটনায় ভারী অস্ত্র হাতে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখা গেছে হেলমেট পরা কয়েকজনকে। তাদের সঙ্গে ছিল হাতে লাঠি থাকা অনেকেই।
এ সংক্রান্ত ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর হেলমেট পরা একজনকে যুবলীগ নেতা বেলাল এবং তার পেছনে কালো পাঞ্জাবি পরা ব্যক্তিকে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন আলমগীর চৌধুরী বলে শনাক্ত করেন অনেকে। যদিও এটা সত্য নয় বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ।

অস্ত্রধারীরা কারা- এমন প্রশ্নের উত্তরে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে চকরিয়ায় সংঘাতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং নিহত ব্যক্তির স্ত্রী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। সংঘাতে অংশগ্রহণকারী অস্ত্রধারী লোকদের এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব অস্ত্রধারীকে শনাক্ত করা সম্ভব হলে আইনের আওতায় আনা হবে।

ছয় মামলার মধ্যে চকরিয়ায় তিনটি, পেকুয়ায় দুটি ও সদরে একটি মামলা হয়েছে।
এই ছয় মামলায় ৪৬৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১১ হাজার ৯০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের পাঁচটি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সরকারি কাছে বাধা প্রদানের দায়ে।

চকরিয়ায় করা পুলিশের দুটি মামলায় আসামি চার সাংবাদিক হলেন দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা আবদুল মজিদ, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ ও পূর্বদেশ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি বিএনপিকর্মী একেএম ইকবাল ফারুক, কক্সবাজারের স্থানীয় দৈনিক কক্সবাজার সংবাদ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা একেএম বেলাল উদ্দিন এবং দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার উপকূলীয় সংবাদদাতা চকরিয়া উপজেলা যুবদলের সভাপতি এএম ওমর আলী।

বিষয়টি নিয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ জানিয়েছেন, এই চারজন সাংবাদিক হলেও সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে শনাক্ত হয়েছে। এর কারণেই মামলার আসামি করা হয়েছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, তাদের ফেসবুক আইডিসহ নানা কিছু পর্যালোচনা করলেই বুঝতে পারবেন, তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না? তবু এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্ত করা হবে।

চার সাংবাদিককে আসামি করায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে চকরিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিজবাউল হক। তিনি বলেন, ওইদিনের ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই সাংবাদিকরা জড়িত নন। মামলা থেকে দ্রুত তাদের বাদ দেওয়া হোক।

পেকুয়ায় হওয়া মামলার ১৩২ নম্বর আসামি আজিজুল হক। তিনি বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভারুয়াখালী এলাকার বজল আহমদের ছেলে। ওই ওয়ার্ডটির ইউপি সদস্য (মেম্বার) মোহাম্মদ ইউনুছ। তিনি নিজেও ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।

মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, ‘আমি মামলার আসামি হয়েছি, ভালো কথা, কিন্তু আসামি আজিজুল হক একজন প্রবাসী। তিনি ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর থেকে সৌদি আরবে থাকেন।’

বিষয়টি নিয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার জানান, আজিজুল দেশের বাইরে থাকলেও তিনি জামায়াতকর্মী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি নানাভাবে ঘটনার পেছনে উস্কানি দিয়েছেন। বিষয়টি আরও অধিকতর তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলন

সাঈদীর গায়েবানা জানাজা পরবর্তী হামলার ঘটনায় একটি ভাইরাল ছবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগ। এতে অভিযুক্ত পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন আলমগীর চৌধুরী, সাত নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বেলাল উদ্দিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটুসহ উপস্থিত অন্যরা দাবি করেন, ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেউ জড়িত নন। দুর্নাম রটাতে কুচক্রী মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।

পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বেলাল দাবি করেন, ‘গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। হেলমেট পরা ভারী অস্ত্র হাতে থাকা ওই ব্যক্তি নাকি আমি। অথচ এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই আমি জড়িত নই। যারা জড়িত তাদের শাস্তি দাবি করছি।’ প্রতিদিনের বাংলাদেশ’

পাঠকের মতামত

উখিয়ার সোনার পাড়া হাটেই বিক্রি হচ্ছে ৮০ লাখ টাকার সুপারি, খুশি চাষিরা

আব্দুল কুদ্দুস,কক্সবাজার কক্সবাজারে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে সুপারির। ভালো দামও পাচ্ছেন চাষিরা। ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্প মুখি নয়, কলেজ মুখি হতে হবে শিক্ষার্থীদের-শাহজাহান চৌধুরী

নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষায় মেধা প্রস্ফুটিত হয়। উচ্চ শিক্ষায় অভিভাবক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে আগামীর সুন্দর ...

চেয়ারম্যান ও ৩ প্যানেল চেয়ারম্যান অনুপস্থিত : হ্নীলা ইউনিয়নের সেবা কার্যক্রম বন্ধ

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ইউনিয়নেরে চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান ৩ জন অনুপস্থিত ...