টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। সৈকতে নেমে গোসলে মেতেছেন অনেকেই। কেউবা ঘুরে ঘুরে সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। কেউ এসেছেন পরিবারসহ, কেউ বন্ধুদের সঙ্গে। আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরা।
এদিকে পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে কক্সবাজারে সপ্তাহব্যাপী চলছে পর্যটন মেলা ও কার্নিভাল। মেলা উপলক্ষ্যে হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস, কটেজ এবং রেস্তোরাঁয় ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এসব ছাড়ের প্রলোভনে কক্সবাজারে এসে হতাশ হয়েছেন অনেক পর্যটক।
তাদের অভিযোগ, বিশাল ছাড়ের খবর পেয়ে তারা কক্সবাজার এসেছেন। কিন্তু কোথাও ছাড় দিচ্ছে না। ছাড়ের কথা বললে রুম ভাড়া দিতেই রাজি হচ্ছে না। একই অবস্থা খাবার হোটেলেও।
ঢাকার মীর হাজিরবাগ থেকে আসা পর্যটক সাইলা, আঁখি ও রাফসান বলেন, পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে কক্সবাজার থাকার হোটেল ও খাবারসহ সব কিছুতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেটি দেখে আমরা ছুটি উপভোগ করতে বন্ধুরা মিলে এসেছি। তবে যে হোটেলে উঠেছি সেখানে অতিরিক্ত ভাড়া। কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি।
কুমিল্লা থেকে আগত পর্যটক হামায়েত বলেন, আজ সকালে কক্সবাজার এসেছি। বিচ ভিউ নামক একটি হোটেলে রুমের জন্য যাই। প্রথমে বলে রুম নেই। পরে একজন লোক এসে বলে রুম আছে তবে তিন হাজার টাকা দিতে হবে। পরে খাবার হোটেলে গিয়ে দেখলাম সেখানেও কোনো প্রকার ছাড় নেই। এসব লোভ দেখানো ছাড় বলে মন্তব্য করেন এই পর্যটক।
হোটেল মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, টানা ছুটিকে কেন্দ্র করে বিপুল সংখ্যক পর্যটক এসেছে। ইতোমধ্যে শতভাগ বুকিং হয়ে গেছে। ছাড়ের বিষয়টি কেউ মানছেন, আবার কেউ মানছেন না। শতভাগ মানাতে তারা প্রশাসনের আরও নজরদারি প্রত্যাশা করেন।
হোটেল ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, আমার হোটেলে ৬০ শতাংশ ছাড় দিয়েছি। আপনারা চাইলে আমার হোটেলে যারা আছেন তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোনো নিয়ম মানছেন না।
কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, আমাদের সমিতির যত হোটেল আছে তারা নিয়ম মেনে ছাড় দিচ্ছেন। তবে কিছু হোটেল ছাড় দিচ্ছে না। এজন্য প্রশাসনের মনিটরিং দরকার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, বেশ কয়েকমাস তাদের মন্দা কেটেছে। তার মধ্যে মেলা উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনকে চাঁদা দিতে হয়েছে। তাই এই টাকা তুলে নিতে ছাড় দিতে পারছি না।
তবে জেলা প্রশাসনের দাবি- হোটেল রেস্তোরাঁসহ যে সকল খাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে সেটি যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কিনা তা তদারকি করতে আলাদা টিম কাজ করছে। কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজার পর্যটক সেলের ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দজাদী মাহবুবা মঞ্জুর মৌনা বলেন, আমরা যে ছাড়ের কথা বলেছি সেটা কার্যকর করার জন্য আমাদের আলাদা টিম কাজ করছে। যদি আপনাদের কাছে কোনো হোটেল ছাড় দিচ্ছে না- এই রকম কোনো তথ্য থাকলে আমাদের সহযোগিতা করুন। আমরা ওই হোটেলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব