হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে বন বিভাগের উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন এলাকায় বাড়ছে হাতির সংখ্যা। হাতির সুরক্ষায় গড়ে তোলা হয়েছে এলিফেন্ট রেসপন্স টিম। হাতি দ্বারা ফসলের ক্ষতি ও প্রাণ হানি হলে দেওয়া হচ্ছে ক্ষতিপূরণ। এতে কমছে মানুষ ও হাতির দ্বন্দ্ব। মৌজা বন থেকে সংরক্ষিত বনে হাতি স্থায়ীভাবে ফিরিয়ে নিতে প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন বলে জানান বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
ad
বসতি স্থাপনে পাহাড়ি জঙ্গলে ঘর তৈরি এবং জুম চাষের জন্য বনে আগুন দেওয়ার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে হুমকির মুখে পড়ে হাতির বাসস্থান ও বিচরণ ক্ষেত্র। এতে মাঝে মাঝেই মানুষের বসতি ও ফসলি জমিতে হাতির হামলার ঘটনা বেড়ে যায়। এ অবস্থায় মানুষ ও হাতির দ্বন্দ্ব নিরসনে এগিয়ে এসেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ।
পাবলাখালি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের লাগায়ো হাতির ৫টি বিচরণ ক্ষেত্র চিহ্নিত করে গড়ে তোলা হয় এলিফেন্ট রেসপন্স টিম। হাতি রক্ষায় মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে টিমের সদস্যরা। হাতির অবস্থান জানিয়ে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সর্তকও করে তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল বলেন, ‘হাতি আমাদের ক্ষতি করলে আমরা হাতির ক্ষতি করি না। হাতি ক্ষতি করলে আমরা সরকারকে জানাই। এর আগেও ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপুরণ পেয়েছে। কীভাবে হাতির দ্বারা ক্ষতি কমানো যায় সে বিষয়ে স্থানীয়দের পরামর্শ দিই। হাতির অবস্থান জানিয়ে সাধারণ মানুষকে সর্তক করে দিই।’
বনবিভাগ বলছে হাতির কারণে ফসলের ক্ষতি এবং মানুষের প্রাণহানি ঘটালে যাচাই-বাছাই করে দেওয়া হয় ক্ষতিপূরণ।
পাবলাখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা সজীব কুমার মজুমদার বলেন, ‘ফসলের ক্ষতির জন্য ৫০ হাজার টাকা, হাতির দ্বারা আহত হলে ১ লাখ টাকা এবং কেউ নিহত হলে ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। এই নিয়ে ১০৮ জন ক্ষতিগ্রস্তকে ২৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।’
হাতিকে বনাঞ্চলে ফেরানোসহ এর স্থায়ী সমাধনের লক্ষ্যে কাচালং বনরক্ষায় প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘হাতির সাথে মানুষের দ্বন্দ্ব আছে। সরকার চেষ্টা করছে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার। তবে হাতি যেন বনাঞ্চল ফিরে সেই চেষ্টা করতে হবে। এজন্য সরকারসহ বিদেশি দাতা সংস্থার কাছে প্রকল্প দেওয়া আছে। ৫ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে হাতি লোকালয় ছেড়ে বনে ফিরে যাবে।’
বনবিভাগের তথ্য মতে, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ২৬০টি বন্য হাতি রয়েছে।