হঠাৎ ভারতে যাওয়ার হিড়িক পড়েছে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে। পুলিশ সদর দপ্তর মাত্র তিন দিনেই (১২, ১৪ ও ১৫ আগস্ট) ৫৫ পুলিশ সদস্যকে ভারতে যাওয়ার অনুমতি ও ছুটি মঞ্জুর করেছে। আজ রোববার এ ধরনের আরও ১০০ জনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
ভারতে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া পুলিশ সদস্যদের মধ্যে পরিদর্শক থেকে শুরু করে সার্জেন্ট, এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলও রয়েছেন। তাঁদের সবাই যাচ্ছেন নিজের বা পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা করাতে। এ জন্য তাঁদের দুই মাস থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন ১০ দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে এত পুলিশ সদস্য একসঙ্গে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাননি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। হঠাৎ চিকিৎসার জন্য এত পুলিশ সদস্যের ভারতে যাওয়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক মো. ময়নুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে যাঁদের প্রজ্ঞাপন হয়েছে, তা যথাযথ প্রক্রিয়া মেনেই হয়েছে। তারপরও বিষয়টি আমরা “রি-চেক” করব। যদি কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, আমরা আবারও খতিয়ে দেখব।’
তিন দিনে যাঁদের নামে প্রজ্ঞাপন
১২, ১৪ ও ১৫ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পুলিশ পরিদর্শকের অনেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়েই চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছেন। তাঁরা হলেন নওগাঁর পরিদর্শক (নিরস্ত্র) আবদুস ছালাম খান, চাঁদপুর নৌ পুলিশের বেলাল হোসেন, সুনামগঞ্জের ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের খোরশেদ আলম, বগুড়ার এপিবিএনের পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) মোফাকখারুল ইসলাম, জিএমপির সিদ্দিক-উর-রহমান ভুঞা, রাজশাহীর আরএমপির এসআই (নিরস্ত্র) কাজল কুমার নন্দী। নিজের চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন ডিএমপির এসআই (নিরস্ত্র) তোফাজ্জেল হোসেন, মোস্তফা কামাল, রংপুর আরআরএফের এসআই (সশস্ত্র) পবিত্র চন্দ্র পাল, গাইবান্ধার গোলাম মোর্শেদ, যশোরের এএসআই (নিরস্ত্র) ইমরান হোসেন, সাতক্ষীরার শেখ মো. সাইফুল্লাহ, নৌ পুলিশের জাহিদুল ইসলাম, দিনাজপুরের নুরুল ইসলাম, মেহেরপুরের বিজয় কুমার, গোপালগঞ্জের সোহাগ মোল্লা, ময়মনসিংহের বিশ্বজিৎ শীল, ফরিদপুরের কনস্টেবল শাহেদুল ইসলাম ও বাপ্পী বিশ্বাস এবং গোপালগঞ্জের জাহাঙ্গীর হোসেন রানা। পাশাপাশি বরিশালের এএসআই (নিরস্ত্র) মো. আমিনুল হক, ঢাকা এসবির কনস্টেবল কাউছার আহমেদ ও নীলফামারীর মো. আনিসুর রহমানও ভারতে যাচ্ছেন চিকিৎসার জন্য।
দুই মাসের ছুটি নিয়ে ভারতে যাচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কনস্টেবল আকমল হোসেন। আরও যাচ্ছেন কেএমপির তপন কুমার মণ্ডল, নোয়াখালীর তোফায়েল হোসেন, নওগাঁর সেকেন্দার আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের এএসআই (নিরস্ত্র) ইয়াকুব আলী, খুলনার সোহেল রানা, পাবনার আনিছুর রহমান, ঝিনাইদহের শিরীন সুলতানা, আরএমপির এসআই (সশস্ত্র) পারভীন আখতার, ঝিনাইদহের আবদুল জলিল, ফরিদপুরের এসআই (নিরস্ত্র) আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জের মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, রাজশাহীর ইমাজ উদ্দিন ও মামুনুর রশীদ।
স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছেন র্যাব-৩-এর এসআই (নিরস্ত্র) মুহম্মদ ইয়াছিন, ডিএমপির সার্জেন্ট সুকান্ত হীরা ও কনস্টেবল স্বপন চন্দ্র বিশ্বশর্মা। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গার নায়েক তাপস সরকার, খুলনার কনস্টেবল মাইনুল হক শেখ, ঢাকা এসবির দুলেনা আক্তার, ঝিনাইদহের সাদিকুজ্জামান পিয়াল, বিএমপির সুধারাম বৈদ্য, আরএমপির ফরহাদ সেলিম, ডিএমপির মাসুদ রানা, শরিফুল ইসলাম, সেলিম খান, ইউসুফ আলী, কেএমপির জি এম মঞ্জুরুল হাসান রাজিব, খুলনা এপিবিএনের মোস্তাফিজুর রহমান, খুলনার শিপংকর সরকার ও যশোরের রমা ব্যাপারীও যাচ্ছেন।