কক্সবাজারের পেকুয়ায় ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে হাসপাতালে নেওয়া সেই প্রসূতির সন্তানের নাম রাখা হয়েছে ‘মোকা’। আজ রোববার ভোরে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই নবজাতকের জন্ম হয়।
ওই প্রসূতির নাম জয়নব বেগম (১৯)। তিনি উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বামুলা পাড়ার মো. আরকানের (২২) স্ত্রী।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র কারণে অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূ গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের এয়ার আলী খান আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছিলেন। আশ্রয়কেন্দ্রে আসার কয়েক ঘণ্টা পর তার প্রসববেদনা শুরু হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য কোনো পরিবহন পাওয়া যাচ্ছিল না। এ সময় পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার এগিয়ে আসেন।
জানা যায়, আশ্রয়কেন্দ্রে রাত ১টার দিকে জয়নব বেগম প্রসববেদনায় কাতরাতে শুরু করলে হাসপাতালের নিচে গাড়ি খোঁজাখুঁজি শুরু করেন আরকান। কিন্তু মধ্যরাতে তিনি কোনো গাড়ি পাচ্ছিলেন না।
এমন সময় আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে যান পেকুয়া থানার ওসি ওমর হায়দার। এরপর নিজের সরকারি গাড়িতে জয়নব বেগমকে ১০ কিলোমিটার দূরের সরকারি হাসপাতালে পৌঁছে দেন তিনি। সেখানেই আজ রোববার ভোরে জয়নব এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। পরে সকাল ১০টার দিকে জয়নব তার সন্তানকে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরে যান।
প্রথম সন্তান জন্ম দিয়ে উচ্ছ্বসিত জয়নব বেগম বলেন, ওসি স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। স্যার না থাকলে আমার কী অবস্থা হতো, জানি না।
জয়নবের স্বামী মো. আরকান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকার নামানুসারে আমার ছেলের ডাকনাম “মোকা” রাখা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, ওই নারী স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। মা ও ছেলে দু'জনই ভালো আছে।
ওসি ওমর হায়দার বলেন, প্রসব বেদনায় কাতরানো ওই নারীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে ওই মুহূর্তে আমার সরকারি গাড়ি ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। পুলিশের কাজই তো জনকল্যাণ। আমি সে কর্তব্য পালন করেছি মাত্র