গ্রুপ পর্বে পেরুকে চার গোলে উড়িয়ে দিয়েছিলো ব্রাজিল। কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে আবারও সেই পেরুকে পেয়ে সহজেই উতরে যাওয়ার কথা বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। কিন্তু যতটা সহজ ভাবা হয়েছিল ঠিক ততটাই মাঠের পারফরম্যান্সে মনে হয়নি। ফাইনালে ঠিকই জায়গা করে নিয়েছে সেলেসাওরা। তবে এর জন্য বেশ ঘাম ঝরাতে হয়েছে নেইমারদের। পাকেতার একমাত্র লক্ষ্যভেদী গোলে প্রথম সেমিফাইনালে ব্রাজিল হারিয়েছে পেরুকে।
কোপার ১০৫ বছরের ইতিহাসে এ নিয়ে ২১ বার ফাইনালের দেখা পেলো ব্রাজিল। সেমিতে ব্রাজিল দলে দুটি পরিবর্তন। জেসাস সাসপেনশনের কারণে নেই। ফিরমিনোর জায়গা হয়েছে বেঞ্চে। পাকুয়েতা ফিরেছেন।এভারটনও আছেন। অন্য দিকে পেরুর দলে একটি পরিবর্তন।
রিও দে জেনোরিওর স্তাদিও নিলটন সান্তোসে স্বাগতিকরা প্রথমার্ধে স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলেছে। বল দখলে এগিয়ে থেকে তিতের ৪-২-৩-১ ছকে নেইমার-কাসেমিরোরা দুর্বার। বিপরীতে পেরু ৩-৫-১-১ ছকে নিজেদের রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত ছিল।
ম্যাচের শুরু থেকে প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হয়ে গোল করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু গোল পেতে তাদের সময়ে লেগেছে। পেরুর গোলকিপার গাল্লেসে একাই তেকাঠির নিচে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
৮ মিনিটে পাকেতার পাস থেকে বক্সে ঢুকে গোলকিপারকে কাটিয়ে কাটব্যাক করেছিলেন রিচার্ললিসন, কিন্তু নেইমারের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। চার মিনিট পর কাসেমিরোর ফ্রি-কিক গোলকিপার কোনমতো প্রতিহত করেন।
১৯ মিনিটে কাসেমিরোর দূরপাল্লার শট গোলকিপার ঝাঁপিয়ে পড়ে গোল হতে দেননি।
খানিক পরই পাকেতার ক্রসে নেইমারের শট ফিরিয়ে দেন গাল্লেসে। ফিরতি বলে রিচার্ললিসন শট আবারও ফিরিয়ে দিয়ে দলকে ম্যাচে রাখেন গোলকিপার স্বয়ং।
৩৫ মিনিটে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ব্রাজিলকে। গোল করে এগিয়ে যায়। নেইমার একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বক্সে ঢুকে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বল বের করে পাকেতাকে কাটব্যাক করেন,চলতি বলে এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বা পায়ে প্লেসিং করে দিতে কোনও কার্পণ্য করেননি। এই অর্ধে পেরু মাঝে-মধ্যে প্রতিআক্রমণে ওঠে ভীতি ছড়ালেও গোলকিপার এডারসনের বড় পরীক্ষা নিতে পারেনি।
বিরতির পর পেরু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। মধ্যমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্রাজিলের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। তবে গোলকিপার এডারসেনের দৃঢ়তায় গোল হয়নি। এ ছাড়া পেরুর ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতা কম ছিল না।
৪৯ মিনিটে লাপাদুলার বা পায়ের জোরালো শট পেরুর গোলকিপার ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন। ৫২ মিনিটে গার্সিয়ার শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। আট মিনিট পর গার্সিয়ার আরও একটি প্রচেষ্টা গোলকিপার ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন। ৮১ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে পেরুর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
ব্রাজিলও এই অর্ধে লড়াই করার চেষ্টা করেছে। ৬৫ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হয়। নেইমারের শট ক্রস বারের ওপর দিয়ে গেলে ব্যবধান বাড়ানো সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের স্কোরলাইন রেখে ব্রাজিল ফাইনাল নিশ্চিত করে।
পাঠকের মতামত