তাহমিদ অমিত::
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ডাক্তার থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা, প্রশাসনসহ পেশাজীবী যারা কাজ করছেন তাদের জন্য প্রণোদনা থাকবে। তাদের তালিকা করা হবে, সম্মাননা দেয়া হবে। খুব খুশি লাগছে। এটার প্রয়োজন ছিল। অর্থ নয়, এই সাহসটাই বড় শক্তি। যদিও পেশাজীবীদের মধ্যে গণমাধ্যমের নাম আমার কানে আসেনি। জানি না তাদের কথা বলা হয়েছে কি না। অন্তত আমি শুনিনি।
করোনা সংক্রমণ নিয়ে দিন-রাত কাজ করছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। আমরা কোনো প্রণোদনা চাই না৷ কোথাও নাম আসুক সেটাও চাই না। আমাদের সহকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। ওই টিভির ৪৭জন কর্মীকে ছুটি দেয়া হয়েছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিই জানে তারপরও কতটা কষ্ট করে তারা টিভি চালু রেখেছে। এটা করতে গিয়ে প্রত্যেক কর্মীর কাজ করার সময় বেড়েছে। তবু তারা কাজ করে চলেছে।
এদিকে ভয়ংকর কঠিন সময় পার করছে প্রিন্ট মিডিয়া। কয়েকটা পত্রিকা তাদের প্রিন্ট ভার্সন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। তবু চলছে করোনা মোকাবেলায় গণমাধ্যমকে সক্রিয় রাখার সংগ্রাম। অনেক গণমাধ্যমকর্মী এখনো ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পাননি। মার্চ তো অনেক পরের কথা। অসুস্থ হলে তাদের জন্য নেই কোনো ইনস্যুরেন্স। মারা গেলে তাদের পরিবারের হাত শূন্য থাকবে। সাংবাদিকতাতো আর কোনোসরকারি চাকরি নয় যে পেনশন পাবে। তারপরও, এখন পর্যন্ত কোনো সাংবাদকর্মীকে বলতে শুনিনি - কাজ করবো না।
বলছি না আমরা মহান। তবে এই পেশাটা মহান। কেননা একজন সৈনিক কি বলে যে, আমি যুদ্ধে যাবো না, গুলি খেতে পারি। সে খুশি মনেই যুদ্ধে যায়, এখন সময়টা এরকমই। দুই মাস বেতন না পেয়ে, বাসায় দুধের বাচ্চা রেখে সংবাদের খোঁজে যান গণমাধ্যমে এমন কর্মীও আছেন। গভীর রাতে সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে, শরীরভরা জীবাণু নিয়ে ঘরে ফিরে তারা হয়ত স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করেন, আল্লাহ আমার কারণে আমার সন্তানের যেন কোনো ক্ষতি না হয়। সবাই গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের ভালোবাসা আর দোয়াই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।
লেখক: সিনিয়র রিপোর্টার, যমুনা টেলিভিশন