নিউজ ডেস্ক::
বাংলাদেশে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ২০ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট মাদক হিসেবে সেবন করা হয়। মিনিটের হিসেবে তা দাঁড়ায় ১৩৮৯। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে এদেশের বিপথগামী তরুণ সমাজ প্রতিমিনিটে ১৩৮৯ ইয়াবা মাদক হিসেবে গ্রহণ করে।
এই ট্যাবলেটের চেহারা বেশ আকর্ষণীয়, কালারফুল অথচ এর মধ্যে মিশ্রিত থাকে এক প্রকার বিষ। যা মেটামফেটামিন ও ক্যাফেইন। এই ওষুধ উচ্চ পর্যায়ের নেশাজাতীয় ওষুধ এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের ধ্বংসাত্মক যা একজন মাদকসেবীকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর শুধু ২০১৬ সালেই প্রায় ৩ কোটি (দুই কোটি ৯৫ লাখ) বাজেয়াপ্ত করে। অথচ ২০১০ সালে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৮১ হাজার। একটু হিসেব করলেই বেরিয়ে আশঙ্কাজনক হারে এই দেশে ইয়াবা গ্রহণের হার বেড়েছে কিংবা বলা যায় মাত্র ৬ বছরে ভয়ঙ্করভাবে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার হার বেড়েছে।
সম্প্রতি, চট্টগ্রামের সমুদ্র উপকূলে একটি মাছ ধরা ট্রলার থেকে ১৫ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ২০০৬ সাল থেকে এই মেটামফেটামিন গ্রহণের প্রবণতা শুরু হয়েছে। যা ছিল পূর্বে কাশির সিরাপে। আর ইয়াবা চোরাচালানের জন্য ব্যবহার করা হয় টেকনাফের নাফ নদীকে। কেননা মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে ইয়াবা প্রবেশের অন্যতম রুট এই নাফ নাদী।
লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে এই ইয়াবা ব্যবসা। মিয়ানমারের ৬০ টাকার এই ট্যাবলেট পাচার হয়ে এসে রাজধানী ঢাকায় বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা। আর এ কারণে পেশা পরিবর্তন করে মাদক ব্যবসায় ঝুঁকছে মানুষ। আর সুযোগে সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার কোটি টাকা।
দীর্ঘদিন টেকনাফে চাকরি করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন একজন কর্মকর্তা জানান, টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকার মাদক পাচারের পয়েন্টগুলোতে সর্বোচ্চ নজরদারি থাকলেও নানা কৌশলে ইয়াবার চালান আসছেই।
ইয়াবার পেছনে খরচ করছেন তারা পৌনে দুইশ’ কোটি টাকা। মরণনেশা ইয়াবার একদিনের চাহিদার এমন আশঙ্কাজনক তথ্য খোদ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের। একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দিতে ওই পরিবারের একজন মাদকসেবিই যথেষ্ঠ। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার ইয়াবা চোরাচালানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশের মানুষের উচিৎ সরকারকে সহযোগিতা করা। তাহলেই এদেশের হাজার হাজার পরিবার মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে বেঁচে যাবে। বাঁচবে তরুণ প্রাণ। কালেরকন্ঠ