শুধু নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণই নয়, এবারের আমেরিকা সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওয়াশিংটন ডিসিতেও যাওয়ার কথা রয়েছে। দিল্লি সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে, এবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। তবে এই সময়ে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের সম্ভাবনা দেখছেন না তারা। কিন্তু শরণার্থীদের জন্য দাতাগোষ্ঠীর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা আদায়ের সম্ভবনা রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফরকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সাউথ আফ্রিকায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর, নয়াদিল্লিতে জি-টোয়েন্টির লিডার্স সামিট। নরেন্দ্র মোদির আতিথেয়তা ও জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাপ এবং সেলফি। এসব নিয়ে যখন দেশের রাজনীতি সরগরম, তখনই জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আমরিকা সফরে শেখ হাসিনা।
২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন তিনি। এর আগে ১৯ সেপ্টেম্বর যোগ দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া নৈশভোজে। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে, সরকারের অবস্থান জাতিসংঘের অধিবেশন বা সাইডলাইন বৈঠকে পরিষ্কার করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালি-উর রহমান বলেন, “দিল্লিতে জো বাইডেনের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে তার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। তারা আমাদের নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে না। সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন তারাও চায় আমরাও চাই”।
বাংলাদেশের উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্বাস্থ্য খাতে সাফল্যের পাশাপাশি বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা, নিরাপদ অভিবাসন, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু ও ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলো জাতিসংঘে তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির বলেন, “এই সফরে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের সম্ভাবনা নেই। তবে, শরণার্থীদের ভরণ-পোষণে দাতাগোষ্ঠীর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সাহায্য আদায় সম্ভব। সরকারের সাফল্যগাথা বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অর্থ প্রাপ্তি, কোভিড-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী নানা সংকট, জ্বালানি-খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতে পারেন তিনি”।
“এসব যদি বিশ্বনেতাদের মধ্যে অনুরণিত হয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গৃহীত হয়, তা বাংলাদেশের জন্য বড় প্রাপ্তি হবে”- বলেন এম. হুমায়ুন কবির।
এদিকে, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে, নিউইয়র্কে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রবাসীরা। নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এই সফরে নির্বাচন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশকে নিয়ে যেসব প্রশ্ন তুলছে মার্কিন প্রশাসন, সেসব বিষয়েও ঢাকার অবস্থান ওয়াশিংটনকে জানানো হতে পারে।