আব্দুল মালেক,সেন্টমার্টিন::
"টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত পুণর্বিবেচনা ও দ্বীপবাসীর জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি" ব্যানারে মানববন্ধন করেছে সেন্টমার্টিনবাসী।
টেকনাফ থেকে দ্রুত পর্যটকবাহী জাহাজ চালু করার দাবী জানিয়েছেন দ্বীপের মানুষ। শুক্রবার দুপুরে সেন্টমার্টিন বাজারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে দ্বীপের সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
দ্বীপবাসীর দাবী এ দ্বীপের শতভাগ মানুষ পর্যটন ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। বছরে মাত্র ৪ মাস পর্যটন ব্যবসা করে যে আয় হয় সেটি দিয়ে বাকি সময় অতিবাহিত করতে হয় তাদের। এখন নাব্যতা সংকটের অজুহাতে টেকনাফ রুট থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ করায় পর্যটক সীমিত হয়ে গেছে দ্বীপে। ফলে আয় রোজগার কমে গেছে এখানকার মানুষের। এই অবস্থা চলতে থাকলে অল্প সময়ের মধ্যে দ্বীপে দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে বলে দাবী তাদের।
তারা জানান, এখন কক্সবাজার থেকে সরাসরি কর্ণফুলী নামে যে জাহাজ চলাচল করে তা ব্যয়বহুল ও দীর্ঘ যাত্রা হওয়ার কারণে সেটি দিয়ে পর্যটকরা সহজে দ্বীপে আসতে চায় না৷ টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হলে পর্যটক সংকট নিরসন হবে।
এসময় সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ং ওয়ার্ড মেম্বার সৈয়দ আলম বলেন, টেকনাফ থেকে জাহাজ চালু না হলে এ দ্বীপের মানুষের ইনকাম বন্ধ হয়ে যাবে। ইনকাম না থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। এ বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সেন্টমার্টিন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খাতিব হাফেজ আবুল হোসাইন বলেন, আমাদের পেটে লাথি না মেরে আমাদেরকে একেবারেই মেরে সাগরে বাসিয়ে দিন। টেকনাফ থেকে জাহাজ চালু না হওয়া মানেই আমাদের পেটে লাথি মারার সমান।
সেন্টমার্টিন হোটেল রিসোর্ট মালিক এসোসিয়েশন সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, টেকনাফ থেকে জাহাজ চালু না হওয়ার জন্যে একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। তারা নাব্যতা সংকটের বাহানা দিয়ে নিজেদের একচেটিয়া বিজনেস পরিচালনা করতে চাই। এবং কিছু পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে গলাটিপে মেরে ফেলার কৌশলে নেমেছে। সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত করণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ করার বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ঐসব পরিবেশের নামধারী সংগঠনগুলো। এরা পরিবেশের নাম দিয়ে বরং দ্বীপের পরিবেশের ক্ষতি করছে।
সেন্টমার্টিন হোটেল রিসোর্ট মালিক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বলেন, অহেতুক নাব্যতা সংকট দেখিয়ে টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছে। টেকনাফ বন্দরে মায়ানমারের বাণিজ্যিক বোট প্রতিনিয়ত চলছে। এই বাণিজ্যিক বোটগুলো পর্যটকবাহী জাহাজের চেয়ে আকারে অনেক বড় এবং অনেক বেশি পণ্য বহন করে। এতো বড় বড় বাণিজ্যিক পণ্যবাহী বোট চলতে পারলে পর্যটকবাহী জাহাজ কেন চলতে পারবে না? আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই নৌরুডে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করতে কোনো অসুবিধা হবে না। দেশের পর্যটন শিল্পকে বেগবান করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি কামনা করছি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী চাইলেই সবই সম্ভব। দ্বীপবাসী তাহার সহযোগিতা চাচ্ছি। টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চালাচলে অনুমতির মধ্য দিয়ে আমাদের দ্বীপের অর্থনৈতিক সংকট নিরসন হবে।
উক্ত মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল চালু না করলে কোন পর্যটক এ দ্বীপে ঢুকতে দেয়া হবে না, কোনো জাহাজ জেটিতে ভিড়তে দেওয়া হবেনা। এমনটাই বলেন দ্বীপের স্থানীয় জনগোষ্ঠীরা