প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলে দেশের স্বার্থে পদত্যাগ করতে রাজি আছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এমন তথ্য জানিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখেন, শিক্ষার্থীরা তো অনেক দাবিই করছেন। এর একটি নিয়ে আপনি জানতে চাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী চাইলে, অর্থাৎ তিনি যদি মনে করেন, আমি পদত্যাগ করবো।’
বিরাজমান পরিস্থিতিতে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক শেষে শনিবার (৩ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
কোটা আন্দোলনকারীদের সব দাবি সরকার মেনে নিয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেগুলো তাদের দাবি ছিল, সব দাবি মানা হয়ে গেছে। দোষী পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনাসহ তারা যা যা দাবি সেগুলোও আমরা মেনে নিয়েছি। আমার মনে হয়, যেহেতু তাদের আর কোনও বাকি নেই, তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইউনাইটেড নেশনস যে ৩২ জন শিশুর মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেছে, তা সঠিক নয়। ১৮ বছরে কেউ শিশু থাকে না, কিশোর হয়।’
শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে পারেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের ডেকেছেন বলেও উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, রবিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটা বলবৎ থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন যা দেখছি— আন্দোলন যে পর্যায়ে গেছে, এটা কোনোদিন কাম্য ছিল না। এখন রাজনৈতিক দলের কাছে... যারা নাকি সবসময় রাষ্ট্রদ্রোহী কাজে ব্যস্ত থাকতো, জামায়াত এবং বিএনপি ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ছিল, দেশকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্রের পরিণত করার জন্য শুরু থেকে চেষ্টা করছিল... আজকে (আন্দোলনকারীরা) তাদের ফাঁদে পড়ে গেছে বলে আমরা মনে করি। এজন্য আপনাদের মাধ্যমে তাদের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে, তারা যেন তাদের লেখা পড়ায় ফিরে যান। যেহেতু তাদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি তাদের কোনও কথা থাকে, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর দরজায় তাদের জন্য সবসময় খোলা আছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের অসহযোগ আন্দোলন তুলে নেওয়া উচিত। তারা ভুল আন্দোলন করছেন।’
এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে কেউ মারা না গেলে, এতো মানুষ কার গুলিতে মারা গেলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা গুলির যে সব আলামত পেয়েছি। সেগুলোর অনেকগুলোই পুলিশের রাইফেলের গুলি নয়, পুলিশ ব্যবহার করেনি।’
যুবলীগ নেতাদের গুলি চালানোর বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুবলীগ নেতা তাদের বাধা দিতে গিয়েছিলেন, গুলি করতে যাননি।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘আপনি (সাংবাদিক) কি জানেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কয়জন মারা গেছেন? আপনি সেটা জিজ্ঞেস না করে উল্টোটা জিজ্ঞেস করলেন।’
শিশুদের মৃত্যু নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও শিশু মারা যায়নি। এখানে হয়তো দুয়েকজন কিশোর মারা গেছেন। এই আন্দোলনের সময় তাদের ঢাল হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছে। তারা সামনে ছিল, পেছনের শক্তিকে রুখতে এই ঘটনাগুলো ঘটেছে।