ডেস্ক রিপোর্ট ::
আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের জন্য ৩ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া থাকলেও প্রায় সবাই দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করতেই নিজেদের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করে ফেলেন। তবে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর উদ্দিন চৌধুরী এত বেশি প্রশংসা করতে থাকেন যে স্বয়ং শেখ হাসিনা তাকে বলতে বাধ্য হন, ‘এত তেল দিয়েন না।’
রবিবার সকালে আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে দলীয় সভাপতির উপস্থিতিতে সারাদেশ থেকে আসা কাউন্সিলররা বক্তব্য রাখার সময় এ ঘটনা ঘটে। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সকাল সাড়ে ৯টায় কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। সেখানে বিভিন্ন জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা বক্তব্য দেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর উদ্দিন চৌধুরী তার বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘নেত্রী আপনার বয়স ৭০ বছর চলছে। কিন্তু আপনার কাজকর্মে, সাহস, শক্তি ও মনোবলে মনে হয় আপনার বয়স ৩০ বছর। আপনাকেই দলের নেতৃত্বে থাকতে হবে।’
তখনই প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, ‘এত তেল দিয়েন না।’
তবে বৈঠকে সভাপতির পদে শেখ হাসিনাকেই আজীবন থেকে যাওয়ার জোর দাবি জানান প্রায় সব কাউন্সিলর। একইসঙ্গে দলের নতুন কমিটিতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের উত্তরসূরী ও ৩য় প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রাখার জোর দাবি জানান কাউন্সিলররা।
পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার শাহাদাৎ সম্রাট তার বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমরা চাই আপনি এমন একটি কমিটি উপহার দেবেন যাতে আমাদের আস্থা বজায় থাকে। আমরা কোনও মীরজাফরকে দলে দেখতে চাই না।’
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাকি বিল্লাহ বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী আপনিও আমাদের ছেড়ে যাবেন না।’ জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যাবো না তো, যাবো কোথায়?’
মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমেদ বলেন, ‘নেত্রী আপনাকে বলছি, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব উপহার দেবেন। গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে দল এগিয়ে গেলে সেটাই ভালো হবে।’
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আজাদ বলেন, ‘যতোদিন বাঁচবেন, ততোদিন আপনাকে দলের সভাপতি হিসেবে দেখতে চাই।’
ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ কোরেশী বলেন, ‘আপনার বিশ্বস্ত যার কাছে দল নিরাপদ থাকবে তার হাতেই নেতৃত্ব তুলে দেবেন বলে আমরা আশা করছি।’
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান ফারুক বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনার আলোতেই আমরা আলোকিত। আমাদের বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ ও মহান অনেকেই আছেন, সবার আগে শেখ হাসিনা, তারপরেই তাদের অবস্থান। আওয়ামী লীগ আপনার সম্পদ। এই দলটাকে যতোদিন পারেন আপনাকেই টেনে নিয়ে যেতে হবে।’
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ বলেন, ‘শেখ হাসিনা আপনি যতোদিন বেঁচে থাকবেন, ততোদিন আপনাকেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেখতে চাই।’
উল্লেখ্য, আজই কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।