প্রকাশিত: ১৫/১০/২০১৬ ৯:৩৬ পিএম

sentজসিম উদ্দিন টিপু, টেকনাফ::
প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পদে পদে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন পর্যটকরা। প্রতারিত হলেও কারণে অকারণে কিছু বলতে পারছেন না ভ্রমণ পিপাসুরা। দ্বীপে আগন্তুকরা সেন্টমার্টিনে চলাচলে ব্যবহ্রত ভ্যান চালক, রেস্টুরেন্টের মালিক ও ট্যুরিজম ব্যবসায় জড়িতদের দায়ী করছেন। ভ্রমণে আসা একাধিক পর্যটক প্রবালদ্বীপে প্রতারিত হচ্ছেন জানিয়ে বলেন, আমাদের ট্যুরিজম ব্যবসায় জড়িত কিছু লোকের মিথ্যা প্রলোভনের শিকার হতে হচ্ছে। পর্যটক এবং পর্যটন সংশ্লিষ্টরা ট্যুরিজম ব্যবসায় জড়িত প্রতিষ্টান, দ্বীপের রেষ্টুরেস্ট এবং ভ্যান চালকদের নিয়ন্ত্রণের দাবী জানিয়েছেন। অনুসন্ধানে জানাগেছে, ট্যুরিজম ব্যবসায় জড়িতরা “প্রবালদ্বীপ, ছেঁড়াদ্বীপ, নিঝুমদ্বীপ, দারুচিনিদ্বীপ, কোরালদ্বীপ” বলে নামে বেনামে রসাত্মক এবং মন ভুলানো শব্দ চয়ণের মাধ্যমে পর্যটকদের প্রতারণা করেই যাচ্ছে। অফার টফার দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে কুষ্টিয়া জেলা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আব্দুল করিম ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কক্সবাজারে কর্মরত ট্যুরিজমের লোকজন বুকিংয়ের বেলায় দেখাই এক রকম বাস্তবে কিন্তু অন্যরকম। এমনকি তাদের কথা এবং বাস্তবতার সাথে কোন ধরণের মিল নেই। নারিকেল জিনজিরা সেন্টমার্টিনে আসলে প্রবালদ্বীপ এবং ছেঁড়াদ্বীপ ছাড়া আর কোন দ্বীপ নেই। অযথা নিঝুমদ্বীপ, দারুচিনিদ্বীপ এবং কোরালদ্বীপ ভ্রমণের কথা বলে তারা পর্যটকদের প্রতারণা করে থাকে। পর্যটকদের সাথে থাকা ট্যুরিজমের গাইডম্যানরা হেসে হেসে বলেন, ভাই এটাই বাস্তবতা। আসলে সেন্টমার্টিনে প্রবালদ্বীপ এবং ছেঁড়াদ্বীপই আছে। এখানে নিঝুমদ্বীপ, দারুচিনিদ্বীপ এবং কোরালদ্বীপের কোন অস্তিত্বই নেই। ভাই, চিরাচরিত বাক্য চয়ণ এবং কৌশলগত কারণে ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করা হয়ে থাকে। সরেজমিনে দেখা গেছে, সেন্টমার্টিন কোনাপাড়া, পশ্চিম পাড়া, কোষ্টগার্ড অফিস ও ডেইলপাড়া এলাকাতে ভ্যান দিয়ে যাতায়াত করা যায়। সেন্টমার্টিন বাজার থেকে ঐসব এলাকার দুরত্ব এক/দেড় কিলোমিটার। অফ সিজনে জনপ্রতি ১০টাকা আর অন সিজনে ২০টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। পর্যটকরাও এসব ভ্যানে করে দ্বীপের অভ্যন্তরে যাতায়াত করেন। এখানকার ভ্যান চালকরা পর্যটকদের কাছে থেকে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে থাকেন। পর্যটকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, ভ্যান চালকরা জনপ্রতি ৫০/৬০টাকা করে নিয়ে নেয়। ভ্যান চালক আব্দুর রহমান, ছালামত উল্লাহ, ছৈয়দ হোছন অন সিজনে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা বেশী নেওয়ার কথা এপ্রতিবেদকের কাছে অনেকটা স্বীকার করে বলেন “ভাইজান উপায় নেই”। “বছরের অর্ধেক সময় ভাড়া পাই এজন্যই যা পাই তা নিই”। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, দ্বীপের খাবার হোটেল তথা রেষ্টুরেন্ট একেবারেই অনিয়ন্ত্রিত। লাগামহীন এসব রেষ্টুরেন্ট সমুহে চলে গলাকাটা বাণিজ্য। পর্যটক পেলেই তারা ইচ্ছামত টাকা নিয়ে নেয়। মৌসুমী ব্যবসার সুযোগে নাকি এখানকার রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা অনেকটা টাকা ইনকামের ফাঁদ বসিয়েছে। স্থানীয় লোকজন রেষ্টুরেন্ট সংশ্লিষ্টদের যন্ত্রণা দিন দিন বাড়ার কথা স্বীকার করেন। পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও অনিয়ন্ত্রিত রেষ্টুরেন্ট সমূহ নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। জানতে চাইলে ট্যুরিষ্ট পুলিশের টেকনাফস্থ অফিস ইনচার্জ উপ পুলিশ পরিদর্শক কাজ¦ী গোলাম মহি উদ্দিন ট্যুরিজম ব্যবসায় জড়িতরা পর্যটকদের প্রতারণা করছেন স্বীকার করে দৈনিক কক্সবাজারকে বলেন, আসলে আমরা গেল সপ্তাহ থেকে বিষয়টি আঁচ করেছি। ট্যুরিজমের লোকজন “প্রবালদ্বীপ-ছেঁড়াদ্বীপ-নিঝুমদ্বীপ-কোরালদ্বীপ-দারুচিনিদ্বীপ”র নামে যা বলে তা কেবল ফাও। লোকবল সংকটের কারণে আসলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। টেকনাফে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের কোন কিছুতেই হয়রাণী করা যাবে না জানিয়ে তিনি পর্যটকদের সুবিধার্থে ট্যুরিষ্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সাধ্যমত সব ধরণের সহযোগীতা দেওয়ার কথা জানান। এদিকে পর্যটকদের কোন কিছুতেই প্রতারণা করা যাবে না জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সফিউল আলম বলেন, পর্যটন সংশ্লিষ্টদের নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতিমালা করা হচ্ছে। পর্যটকদের প্রতারণার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে অভিযোগ পেলেই তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...