কুমিল্লায় এক প্রভাষকের সঙ্গে নিজের অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশ করে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক কলেজছাত্রী।
স্ত্রীর স্বীকৃতি চাওয়ায় সুমাইয়া খন্দকার বিথী নামে ওই কলেজছাত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
গত দেড় বছর আগে নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকার একটি বাসায় ডা. সাইফুল ইসলাম মজুমদার ওই ছাত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ওই বাসা থেকে প্রভাষক সাইফুল উধাও হয়ে যান।
বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করায় স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে আদালতে মামলা করেন ওই ছাত্রী। মামলার পর থেকে ডা. সাইফুল ও তার লোকজনের হুমকির মুখে ওই ছাত্রীসহ তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর টমছমব্রিজ এলাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার জামাল খন্দকারের মেয়ে সুমাইয়া খন্দকার বিথী এসব অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রভাষক ডা. সাইফুল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেম হয়।
পরবর্তীতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সুমাইয়াকে নিয়ে বাগেরহাটে যায় সাইফুল এবং সেখানে সাইফুলের বন্ধুদের পরিচিত এক কাজীর মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। সেখানে স্থানীয় একটি আবাসিক হোটেলে চারদিন অবস্থান শেষে কুমিল্লায় ফিরে আসেন তারা।
পরে নগরীর হাউজিং এস্টেটের ৩ নং সেকশনের ফাইজা হাউজ নামের একটি বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করেন তারা। গত দেড় বছরে সুমাইয়াকে নিয়ে সাইফুল কুমিল্লা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে আনন্দ ভ্রমণে ঘুরে বেরিয়েছেন।
পরবর্তীতে সুমাইয়া স্বামীর বাড়িতে যেতে চাইলে সাইফুল বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে সাইফুল ওই বাসায় সুমাইয়াকে রেখে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কৌশলে উধাও হয়ে যান। বিষয়টি সুরাহার জন্য সুমাইয়া ও তার পরিবার সাইফুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতীকার পাননি।
এতে নিরূপায় হয়ে গত ৭ জুন কুমিল্লা নারী ও শিশু অপরাধ দমন আইনে একটি মামলা করেন সুমাইয়া। এদিকে ওই মামলার পর সাইফুল ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে গত ৯ জুলাই কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। সুমাইয়া বলেন, গত ৩১ জুলাই আমার বাবাকে তালতলা চৌমুহনী নিয়ে ৫ লাখ টাকায় পুরো বিষয়টি মিটমাটসহ মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাদের ভয়ে আমি এখন ঘর থেকে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছি না। আমি টাকা-পয়সা চাই না, আমি সাইফুলের স্ত্রী হিসেবে জীবনের বাকি সময়টা কাটাতে চাই। আমি কোনোভাবেই তাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সুমাইয়ার কলেজের সহপাঠী শাহিনুর রহমান, জোবায়েরুল হক নেপু, আবদুল আসাদ ও শাহিন আক্তার মুন্নী প্রমুখ।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. সাইফুল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, নগরীর হাউজিং এস্টেটে বাসা ভাড়া করে সুমাইয়া থাকতো। আমি মাঝে মাঝে সেখানে যেতাম। কিন্তু তাকে বিয়ে করিনি।
বাগেরহাটের বিনোদন স্পটে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের অনেকগুলো ছবি এবং সেখানে আবাসিক হোটেলে অবস্থানের রিসিট রয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।