ডেস্ক রিপোর্ট::
রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠানে একযোগে অভিযান চালিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। ভ্যাট ফাঁকির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কাগজপত্র ও কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
সূত্র জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গঠিত টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রাণের সব প্রতিষ্ঠানে মঙ্গলবার রাতে একযোগে অভিযান চালিয়ে কাগজপত্র ও কম্পিউটার জব্দ করা হয়।
এ টাস্কফোর্স ভ্যাট ফাঁকি বন্ধে কাজ করে থাকে। ভ্যাট গোয়েন্দার ৫টি টিম নাটোর, নরসিংদী ও প্রাণের হেড অফিসে অভিযানে অংশ নেয়। মধ্যরাত পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক এএফএম আবদুল্লাহ খান বুধবার যুগান্তরকে বলেন, টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে। সব কাগজপত্র সংগ্রহ করতে না পারলে আজও (বুধবার) অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।
*সত্যতা মিলেছে ভ্যাট ফাঁকির
*কাগজপত্র ও কম্পিউটার জব্দ
এ বিষয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বক্তব্য জানতে জনসংযোগ শাখায় যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি জানে না বলে দাবি করে। এছাড়া কোনো কর্মকর্তা আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রি প্রায় ৪০ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। কাঁচামাল আমদানির তথ্য গোপন করাসহ অনুমোদন ছাড়া রফতানি দেখিয়ে ও অবৈধভাবে রেয়াত নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন যাবৎ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে।
গত বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীনস্থ সিলেট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের নিরীক্ষায় এ চাঞ্চল্যকর ভ্যাট ফাঁকির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, এভাবে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।
সম্প্রতি এ বিষয়ে যুগান্তর ও যমুনা টিভি তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর কার্যকর ব্যবস্থা নেয়াসহ দ্রুত অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় ভ্যাট গোয়েন্দা।
হবিগঞ্জের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে রয়েছে গ্রুপটির রংপুর মেটালের কারখানা। এখানে দুটি ইউনিটে বাইসাইকেল, টায়ার, রিম, স্পোক, ক্যাবলওয়্যার, এমএস পাইপ, জিআই পাইপ ও টিউব তৈরি করা হয়। এর মধ্যে একটি ইউনিটের বন্ড লাইসেন্স নেয়া আছে। অন্য ইউনিটের বন্ড লাইসেন্স নেই।
অথচ দুটি ইউনিট পণ্য উৎপাদনে একই কাঁচামাল ব্যবহার করে। আরও আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ইউনিট দুটোর আলাদা ব্যবসা নিবন্ধন নম্বর (বিআইএন) থাকলেও আয়কর অফিসে ইউনিট দুটোর টিআইএন একটিই, যা কোনোভাবে হওয়ার সুযোগ নেই। সমজাতীয় পণ্য উৎপাদনকারী দুটি ইউনিট পাশাপাশি হওয়ায় রাজস্ব ফাঁকির যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।
জানা যায়, নিরীক্ষার জন্য তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে রংপুর মেটালকে ৯ বার চিঠি দেয়া হলেও প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত দলকে কোনো সহযোগিতা করেনি। পরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড (কাস্টমসের ডাটাবেজ সফটওয়্যার) হতে আমদানি তথ্য, কর অঞ্চল-৬ চিঠির মাধ্যমে বার্ষিক অডিট রিপোর্ট ও আয়কর রিটার্ন হতে তথ্যের মাধ্যমে নিরীক্ষা করা হয়।