ঢাকা: প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের সাথে নিজেদের বেতন বৈষম্য নিরসনের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন পালন করছেন প্রাথমিক বিদ্যালেয়ের সহকারী শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে জাতীয় বেতন স্কেলের দাবি আন্দোলনরত প্রাথমিকের সাড়ে তিন লাখ সহকারী শিক্ষকের। সেই সাথে দ্রুত সময়ে দাবি মানার ঘোষণা না পেলে চলতি মাসের ৩০ তারিখে প্রাথমিকের শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রাকশ আটকে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ অনশন শুরু করে শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোট।
দাবির পক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের আগ পর্যন্ত এ অনশন চলবে বলেও জানান শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
তারা বলছেন, দাবি আদায় না হলে প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল আটকে দেয়া হবে। পাশাপাশি ১ জানুয়ারি বই উৎসব পালন করা হবে না বলেও ঘোষণা দেন তারা।
অনশন চলাকালে সহকারী শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৭৩ সালে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল একই ছিল। তারপর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পরের ধাপে ছিল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন। ২০০৬ সালের পর থেকে বেতন স্কেলের ব্যবধান বাড়তে থাকে।
সর্বশেষ ২০১৪ সালের ঘোষণা অনুযায়ী ব্যবধান দাঁড়ায় তিন ধাপে। একই শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেও প্রধান শিক্ষক থেকে তিন ধাপ নিচে বেতন পাচ্ছেন সহকারী শিক্ষকরা। এই বৈষম্যের নিরসন হওয়া জরুরি।
তারা বলছেন, বেতন বৈষম্য দূরীকরণের এমন কোনো কাজ নেই যা আমরা করিনি। প্রধানমন্ত্রী ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর স্মারকলিপি, খোলাচিঠি প্রদানসহ বিভিন্ন সভা-সেমিনার করেছি। অবশেষে আজ আমরা অনশন কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হয়েছি।
শিক্ষক নেতারা বলেন, আমাদের এ দাবিকে সবাই যৌক্তিক দাবি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তবুও এ দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে কী কারণ রয়েছে- তা আমরা জানি না। আমাদের বিশ্বাস শিক্ষকদের এ যৌক্তিক দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেনি। তাই প্রধানমন্ত্রীকে জানানো এবং আমাদের দাবি আদায় করার জন্য এ অনশন।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান- জাতীয় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউল।
তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে কোথাও যাব না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ অনশন অব্যাহত থাকবে।
অনশন চলাকালে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রাথমকি সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি তপন কুমার মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুর রহমান, জাতীয় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোসা. শাহীনুর আক্তার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক ভূইয়া, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ শামসুদ্দীন মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল হক প্রমুখ।