জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অভিযানের ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই আবারও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বসেছে ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানিরা।
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা নামতেই ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানিরা সামুদ্রিক কাঁচা মাছ নিয়ে রাস্তার পাশে এবং সৈকতের বালিয়াড়িতে বসে যান।
এরআগে মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি ও পর্যটকদের পচা ও বাসি মাছ খাওয়ানোর অভিযোগে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে রাস্তার পাশে এবং বালিয়াড়িতে বসানো সব ফিশ ফ্রাইয়ের দোকান বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অভিযানে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের দায়ে ৪টি ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা করে।
কিন্তু জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অভিযানের ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই আবারও ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানিরা সামুদ্রিক কাঁচা মাছ নিয়ে মাছ রাস্তার পাশে এবং সৈকতের বালিয়াড়িতে বসে যান।
বুধবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, সুগন্ধা পয়েন্টের রাস্তার পাশে একের পর এক ভ্যান বসানো হয়েছে। ভ্যানের ওপর সারি সারি সাজানো ছিল টুনা, স্যালমন, রূপচাঁদা, কোরাল, রেড স্নাইপার, সুরমা, স্কুইড, কাঁকড়া, চিংড়ি ও অক্টোপাসসহ নানা প্রজাপতির সামুদ্রিক মাছ। একই সঙ্গে এসব মাছ ভাজা করে ভ্যানের ওপর পরিবেশন করা হয়। অথচ ভ্যানের আশপাশে নোংরা পরিবেশ। এই পরিবেশের মাঝে রয়েছে অসংখ্য বসার টুল। যাতে পর্যটকরা বসে আছেন এবং তার পাশেই নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে সামুদ্রিক মাছের বারবিকিউ এবং ফ্রাই। যা পর্যটকরা বসে খাচ্ছেন।
আরও দেখা গেছে, মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে অভিযানে যেসব ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানিকে জরিমানা এবং দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তারই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেচা-বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানদার নুরু মিয়া বলেন, ‘প্রশাসন তো বন্ধ রাখতে বলবেই। তা বলে কি বন্ধ রাখব!’
এ সময় আরও কথা ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানি সাকিব, সুজন, সালমান, আহমদ, আনিছ ও আব্দু রহমানের সঙ্গে। তারা বলেন, পেটের দায়ে ব্যবসা করছি। প্রশাসন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, এটা মানতে গেলে পেট চলবে না। তাই আদেশ অমান্য করে ব্যবসা করতে বসেছি।
একই সৈকতের বালিয়াড়িতেও একই অবস্থা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সব ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানিরা দোকান নিয়ে বসেছে।
এদিকে, মঙ্গলবার অভিযানে কক্সবাজার জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া পঁচা-বাসি মাছ খাওয়ানো হচ্ছে পর্যটকদের। তেল সবচেয়ে বেশি অস্বাস্থ্যকর। সবগুলো ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাছগুলো তৈরি করা হচ্ছে। সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হচ্ছে পঁচা তেলে মাছগুলো ভাজা হচ্ছে। খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।’
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘মঙ্গলবার অভিযানে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের দায়ে ৪টি ভ্রাম্যমাণ দোকানকে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা করা হয়েছিল। একইসঙ্গে সবগুলো ফিশ ফ্রাই দোকান আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তা অমান্য করে ফিশ ফ্রাইয়ের দোকানিরা ফের ভ্যান নিয়ে বসেছে তা জানা ছিল না। এখনই ব্যবস্থা নেয়া হবে, যারা নির্দেশ অমান্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে। সুত্র : সময়টিভি
পাঠকের মতামত