ব্রাজিলের অনেক সাধারণ মানুষই এবার অলিম্পিক আয়োজনের বিরোধিতা করেছে। কারণটা একইসঙ্গে ছিল বেহাল অর্থনৈতিক অবস্থা এবং অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। তাছাড়া আছে জিকা ভাইরাসের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি। নিরাপত্তা হুমকি। সবকিছুকে পেছনে ফেলে অবশ্য অনেক আয়োজন যেমন হয়েছে, তেমনি অলিম্পিক নিয়ে ব্রাজিলের অনেক মানুষ উৎসবেও মেতেছেন। ব্রাজিলের সাবেক এ রাজধানী, পুরনো এই শহর নতুন রূপে সাজানো হয় অলিম্পিককে ঘিরে। বিদেশী পর্যটক, দর্শকের শহর এখন রিও। মর্যাদার ক্রীড়া আসরের ছোঁয়ায় রূপ পাল্টে গেছে গোটা শহরের। ব্রাজিলের পতাকা হাতে উৎসবে মেতেছেন স্থানীয় দর্শকরাও। আর বিদেশীদের হাতে নিজ নিজ দেশের পতাকা। সব মিলিয়ে এতদিন ঝিমিয়ে থাকা রিও আবার জেগে ওঠে অলিম্পিক উপলক্ষে। যেন নতুন করে সমস্যা জর্জর ব্রাজিল গা ঝারা দিয়ে জেগেছে। এবারের আসরে কসোভো ও দক্ষিণ সুদানসহ ২০৫টি জাতীয় অলিম্পিক কমিটি (এনওসি) থেকে ১১০০০ এরও বেশি ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করছে। ২৮টি অলিম্পিক ক্রীড়ায় ৪১ ডিসিপ্লিনে ৩০৬ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। ইভেন্টগুলো আয়োজনের জন্য আয়োজক শহর রিও ডি জেনিরোর ৩৩ ভেন্যু এবং অতিরিক্ত হিসাবে ব্রাজিলে সর্ববৃহৎ শহর সাওপাওলো, রাজধানী শহর ব্রাসিলিয়া, ম্যানাস ও সালভাদর শহর থেকে ৫ ভেন্যু নির্বাচন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের বিভিন্ন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছিল। ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী সাম্বা নৃত্য তো আছেই। পাশাপাশি থাকছে আরও অনেক চমক। প্রায় ৮০ হাজার দর্শক সরাসরি উপভোগ করেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এছাড়া বিশ্বের তিন বিলিয়ন মানুষ টিভিতে সরাসরি দেখেছেন জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ?শুরুতেই ছিল পতাকা নিয়ে এ্যাথলেটদের মার্চপাস্ট। এরপর পর্যায়ক্রমে নানা শো। সব শেষে ছিল বর্ণিল আতশবাজি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিটি অব গড বিখ্যাত চলচ্চিত্রের পরিচালক ফার্নান্ডো মেয়ারলেস। তার সঙ্গে ছিলেন আন্ড্রুচা ওয়াশিংটন ও ড্যানিয়েলা টমাস। মজার ইভেন্টে গান করেন সাম্বা সিঙ্গার এলজা সোয়ারেস। তিনি ব্রাজিলের সাবেক কিংবদন্তি ফুটবলার গ্যারিঞ্চার স্ত্রী। তার সঙ্গে থেকে ১২ বছর বয়সী এমসি সোফিয়া কথা বলেছেন বর্ণবাদের বিরুদ্ধে। এরপর একে একে মঞ্চ মাতিয়েছেন ক্যারল কনকা, লুডমিলা, গিলবার্তো গিল, কায়েটানো ভ্যালোসো। সুরের মায়াজালে দর্শকদের মোহিত করতে ছিলেন ব্রাজিলের বিখ্যাত সব সঙ্গীতশিল্পী। লাইট এ্যান্ড সাউন্ড শো এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় ব্রাজিলে পর্তুগীজ উপনিবেশের ইতিহাস। উদ্বোধনী মঞ্চ আলোকিত করেন ব্রাজিলের সুন্দরী এবং সুপার মডেলরা। ছিল কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান মডেল গিজেল বান্ডচেনের ।