ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলান আরএসজিটি ইন্টারন্যাশনাল এবং এসিডব্লিউএ পাওয়ার-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের লজিস্টিক, সার্ভিস সেক্টর এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা আল দুহাইলানের সাথে মঙ্গলবার বৈঠক করেছেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলান সৈদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন কারণ সৌদি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
তিনি আরএসজিটি ইন্টারন্যাশনাল এবং এসিডব্লিউএ পাওয়ার-এর মাধ্যমে লজিস্টিক, সার্ভিস সেক্টর এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেন।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তিনি দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে সক্ষম।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৮ আগস্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দায়িত্ব নেওয়ার পরেই প্রসিদ্ধ আইনজীবী এবং অর্থনীতিবিদের সমন্বয়ে গঠিত ড. ইউনুসের প্রযুক্তি-নির্ভর মন্ত্রিসভা বিচার ব্যবস্থা, সিভিল প্রশাসন, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের একটি তালিকা ঘোষণা করেছে, যাতে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা যায়।
সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাথে সাক্ষাৎ করার পর ড. ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেছেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের জন্য একটি "খুব গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু" এবং তার সরকার দেশটির সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অপেক্ষায় রয়েছে।
"বাংলাদেশও সৌদি আরবের জন্য একটি ভালো বন্ধু। আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন, বিনিয়োগ এবং মানবসম্পদসহ অনেক বিষয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া রয়েছে," সৌদি রাষ্ট্রদূত আল দুহাইলান বুধবার (২৮ আগস্ট) রাতে আরব নিউজকে বলেছেন।
তিনি বলেন, "এটি সৌদি বিনিয়োগের জন্য একটি নতুন ক্ষেত্র, একটি নতুন গন্তব্য। আমরা বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি ও লজিস্টিকে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।"
রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশে সরকারি ও জনগণের স্তরে "চমৎকার সম্পর্ক" উপভোগ করে এবং তার ড. ইউনূসের সঙ্গে একটি "ফলপ্রসূ" বৈঠক হয়েছে।
"তিনি বিশেষভাবে বাংলাদেশের সাহায্য করার উপায় এবং এ সময়টাতে শক্তি সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন," আল দুহাইলান বলেন।
"আমি তাকে সৌদি বিনিয়োগের জন্য প্রক্রিয়াগুলো দ্রুত করার এবং সমস্ত বাধা দূর করার অনুরোধ করেছি। এছাড়া সৌদি বিনিয়োগও আকর্ষণ করার কথা বলেছি। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সাধারণভাবে বিনিয়োগকারীদের জন্য এবং বিশেষ করে সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নতুন ক্ষেত্র।"
প্রায় ৩ মিলিয়ন বাংলাদেশি সৌদি আরবে বসবাস ও কাজ করছেন। তারা সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় বিদেশি নাগরিক সম্প্রদায় এবং বাংলাদেশের বাইরে সবচেয়ে বড় বাংলাদেশি সম্প্রদায়।
সৌদি বাণিজ্য মন্ত্রী মাজিদ বিন আবদুল্লাহ আল কাসাবির ঢাকা সফরের পর থেকে দুই দেশের সরকারি ও ব্যবসায়িক বিনিময় বৃদ্ধি পেয়েছে। ঐ সফরে একাধিক বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মাধ্যমে সৌদি আরব বাংলাদেশের শক্তি, সমুদ্র বন্দর এবং কৃষি শিল্পে প্রবেশ করে। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সৌদি-বাংলাদেশ ব্যবসায়িক পরিষদ গঠিত হয়।