নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিংসতা বাড়ছে । বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এমনই প্রতিবেদন করেছে মালয়েশিয়ার দ্য স্টার। এএফপির বরাত দিয়ে স্টার এই বিশ্লেষণ করেছে।
স্টারের বিশ্লেষণে বলা হয়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা বান্দরবানের চাকপাড়া বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষু মং শৈ উকে শুক্রবার দিবাগত রাতে গলা কেটে হত্যা করা হয়। সকালে তার লাশ দেখে পুলিশকে জানায় স্থানীয়রা। ধর্ম নিরপক্ষে ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে এটি সর্বশেষ হত্যাকাণ্ড । কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এখনো ভিক্ষু মং শৈ উ হত্যার দায় স্বীকার করেনি। একই ধরনের হত্যাকাণ্ড দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘঠিত হচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ বাংলাদেশে সহিংসতা বেড়েই চলছে। কেবল এপ্রিল মাসেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাত জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বান্দরবানের উপ-পুলিশ প্রধান জসিম উদ্দিন জানান, শুক্রবার ভিক্ষু মং শৈ উ চাকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসী। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
জসিম আরো জানান, ৭৫ বছর বয়সী ভিক্ষু মং শৈ উ হত্যার সঙ্গে অন্তত চারজন জড়িত। পায়ের ছাপ দেখে আমরা ধারণা করছি ৪-৫ জন এই হত্যার সঙ্গে জড়িত। উ চাক পুরো পূর্ণাঙ্গ ভিক্ষুর দায়িত্ব পাওয়ার পরে তিনি পাহাড় ঘেষা বৌদ্ধ মন্দিরে একাই থাকতেন।
বাংলাদেশের শীর্ষ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানবাধিকার আইনজীবী জোর্তিময় বড়ুয়া বলেছেন, উ চাক অজ্ঞাতনামা স্থান থেকে মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলেন। তিনি দেড় বছর আগে ভিক্ষু নির্বাচিত হন। মৃত্যুর হুমকি পাওয়ার পরেও এটি কেউ গুরুত্ব সহকারে দেখেনি। বান্দরবান হচ্ছে বৌদ্ধদের শত বছরের বাসভূমি। এখানের পরিবেশের সঙ্গে বৌদ্ধরা নিজেদের খাপখাইয়ে জীবন যাপন করছে।
বান্দরবান জেলা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর আনিসুর রহমান জানান, ভিক্ষু উ চাকের হত্যা সম্পর্কে পুলিশ এখনো কোনো মোটিভ পায়নি। তবে ভিক্ষুর কোনো ব্যক্তিগত শত্রুও ছিল না বলেও জানান তিনি। সূফি, শিয়া, আহমদী মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বিদেশি নাগরিক সাম্প্রতিক বছরে বাংলাদেশে হত্যার শিকার হচ্ছে। এই হত্যার দায় স্বীকার করছে ইসলামি চরমপন্থিরা।
গত দুই সপ্তায় বাংলাদেশে একজন নাস্তিক শিক্ষার্থী, দুইজন সমকামী অধিকার কর্মী, একজন ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষক, একজন হিন্দু দর্জি, একজন ধর্মীয় নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আইএস ও আল কায়দা বাংলাদেশি শাখা এই হত্যাগুলোর দায় স্বীকার করেছে। তবে ঢাকার ধর্ম নিরপেক্ষ সরকার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আইএস ও আল কায়দা জড়িত নেই বলে অস্বীকার করে আসছে।
বাংলাদেশ সরকারের দাবি দেশটিতে আইএস বা আল কায়দার মতো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গ্রুপের উপস্থিতি নেই। সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় জঙ্গিরাই জড়িত বলে সরকার দাবি করছে। -