যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটিই যুক্তরাষ্ট্রের কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার প্রথম ঢাকা সফর। আফরিন আক্তার ২৪ ফেব্রুয়ারি তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে আসতে পারেন বলে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্র।
কূটনেতিক সূত্র আরও জানিয়েছে, ঢাকা সফরের সময় আফরিন আক্তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা অনু বিভাগ) খন্দকার মাসুদ আলমের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করবেন। পাশাপাশি পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তার।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ তথা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য রয়েছে। নির্বাচনের আগে ও পরে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেনি। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লেখেন। ওই চিঠিতে দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ‘ঐকান্তিক ইচ্ছার’ কথা উল্লেখ করেন তিনি।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আফরিন আক্তারের বাংলাদেশ সফরের সময় একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুসহ মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় হতে পারে।
radhuni
প্রসঙ্গত, সংসদ নির্বাচনের আগে গত অক্টোবরে আফরিন আক্তার ঢাকা সফর করেন। নির্বাচনের আগে সেটাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার শেষ বাংলাদেশ সফর। সে সময় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রত্যাশার কথা অব্যাহতভাবে বলে যাচ্ছে। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর থাকবে দেশটির। দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারত্বকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের শান্তিপূর্ণ উত্তরণে জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে নির্বাচনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এ নিয়ে কূটনেতিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকেরা বলছেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির পররাষ্ট্রনীতিতে গণতন্ত্র, সুশাসনের মতো মূল্যবোধের বিষয়গুলো সব সময় থাকবে। বাংলাদেশের নির্বাচন–পরবর্তী পরিস্থিতিতে অংশীদারত্বের বিষয়টিকে সামনে রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।