‘টক অব দ্যা কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছে গত ১২ বছরে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) অধীনে ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনা। যত দিন যাচ্ছে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে।
এবার গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে পিএসসির একজন সাবেক মেম্বারের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দিবো, তবে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে হবে, এই শর্তে তিনি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ওই সাবেক মেম্বার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভাপতিও ছিলেন। শুধু জামাই নয়, জামাইয়ের বোনকেও প্রশ্ন দিয়ে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করেছেন তিনি। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের মাধ্যমে ১৯৯৫ সালে ১৫তম বিসিএস পরীক্ষায় জামাই ও তার বোনকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। পিএসসির তৎকালীন ওই মেম্বারের জামাই ও বোন এখন সরকারের দুই জন শীর্ষ কর্মকর্তা।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে পিএসসি প্রশ্ন সীমিত পরিসরে ফাঁস হলেও ২০০২ সাল থেকে তা ব্যাপক আকার ধারণ করে। প্রিলিমিনারি ও লিখিত দুই পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হতে করে। এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন দলীয় নেতা থেকে শুরু করে রিকশাচালক, পান দোকানদারসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
তিনটি বিসিএস পরীক্ষা পর্যালোচনা করেছে সিআইডি। সংস্থাটির সূত্রে জানা গেছে, ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় পুলিশ ক্যাডারে ২৪টি ও ৪১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে ১৬টি জেলার কোন প্রার্থী নির্বাচিত হয়নি। ৪০তম বিসিএসে মোট ৭০ জন উত্তীর্ণ হন, যার মধ্যে ৭ জন নারী। ৪১তম বিসিএসে ৪ জন নারীসহ মোট ১০০ জন উত্তীর্ণ হয়। ৪৩তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে ১৪ জেলায় কোনো প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়নি। মোট ১০০ জন উত্তীর্ণ হন, এর মধ্যে ৯ জন নারী। ফলে এখানে কোটা পূরণ করা হয়নি।
এই তিন বিসিএসে যেসব জেলায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, তারাই উত্তীর্ণ হয়েছেন। পুলিশ ক্যাডারসহ সকল ক্যাডারে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
পাঠকের মতামত