ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/০৬/২০২৪ ১০:৫৮ এএম

ইব্রাহিম খলিল মামুন, কক্সবাজার
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিওআরআই) একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল ২০১২ সালে। প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটির বিভিন্ন ত্রুটি ধরা পড়েছে ২০২৪ সালে এসে।

কারিগরি ত্রুটির প্রমাণ পাওয়ায় ভবনটির ঊর্ধ্বমুখী নির্মাণ প্রকল্প বাতিল করে নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তবে এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিওআরআই এর পক্ষ থেকে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বিওআরআই বাংলাদেশের একমাত্র সমুদ্রবিদ্যা বিষয়ে জাতীয় প্রতিষ্ঠান। সামুদ্রিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় এ প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে তিন তলা পর্যন্ত নির্মাণ শেষ হয়েছে। ভবনের ছাদে ঊর্ধ্বমুখী আরও তিন তলা নির্মাণ করার জন্য বেশ কয়েকটি কলাম এবং বিম ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে। পুরো ছাদ জুড়ে এলোমেলোভাবে ইট ও কংকরের স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

ইনস্টিটিউটের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, ভবনটিতে বড় ধরনের একাধিক ত্রুটি ধরা পড়ায় প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ঊর্ধ্বমুখী আরও তিন তলা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপর থেকে এভাবে পড়ে আছে। এতে প্রচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ভবনটি।

জানা যায়, ভবনের চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী কাজের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০২৩ সালের ৫ এপ্রিল ডেল্টা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসোর্টিয়াম লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নির্মাণ কাজের চুক্তি হয় গণপূর্ত অধিদপ্তরের। চুক্তি অনুযায়ী ১৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা মূল্যের এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে। প্রথম ধাপের কাজও এ প্রতিষ্ঠানটিই করেছিল।

কাজ পাওয়ার পর সম্প্রতি নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরইমধ্যে নির্মাণকাজ তদারকি করতে গিয়ে বিওআরআইর মহাপরিচালক ড. তৌহিদা রশীদের নজরে পড়ে পুরাতন ভবনের বেশ কিছু কারিগরি ত্রুটি। তখন তাৎক্ষণিক নতুন প্রকল্পের নির্মাণকাজ বন্ধ করে পুরাতন ভবনের সার্বিক নির্মাণকাজের মান নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক একটি প্রতিবেদন দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

ভবনটির প্রথম পর্যায় নির্মাণের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ২০১১-১২ অর্থবছরে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ১৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হয়।

ত্রুটির বিষয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ড. তৌহিদা চিঠি দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে। এতে বলা হয়েছে, স্ট্রাকচার ডিজাইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণকাজে অনেক কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়েছে। স্থাপত্য নকশাবহির্ভূত ব্রিক ওয়ালের বিচ্যুতি পাওয়া গেছে। এছাড়া কলাম ও বিমে রডের সংখ্যাও কম।

এ বিষয়ে গত মার্চে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সভায় কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়ায় নতুন করে তিনতলা বিশিষ্ট আরেকটি ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।

কক্সবাজার গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজাহান সমকালকে বলেন, পুরাতন ইনস্টিটিউট ভবনে বেশ কিছু কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়েছে। এসব ত্রুটি সমাধান করে ভবনটির ঊর্ধ্বমুখী নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বিওআরআই কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিন তলা বিশিষ্ট নতুন আরেকটি ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিওআরআই মহাপরিচালক ড. তৌহিদা এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সুত্র: সমকাল

পাঠকের মতামত

আজহারীর পরবর্তী মাহফিল যে স্থানে

সিলেটে যাচ্ছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী।আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনজুমানে খেদমতে কুরআন আয়োজিত ৩৬তম তাফসিরুল ...