ডেস্ক রিপোর্ট::
জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন হয়েছে। বাজেটে ‘নিরাপদ, জলবায়ু পরিবর্তনে অভিঘাতসহিঞ্চ সমৃদ্ধশালী রূপকল্পকে সামনে নিয়ে সরকার ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ নামে একটি অভিযোজনভিত্তিক, দীর্ঘমেয়াদি, সমন্বিত ও সামষ্টিক মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।
পদ্মা, যমুনা, ও মেঘনাসহ অসংখ্য নদ-নদী নিয়ে গঠিত বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ। কিন্তু নদীর গতিপথ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে ৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছে। ঘনবসতির কারণে সম্ভাব্য যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এদেশে বিপর্যয়ের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে যা টেকসই উন্নয়নের পথে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ নামে এই সামষ্টিক মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
পানি সম্পদের টেকসই ব্যবহার এবং পানির দ্বারা সৃষ্ট প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর প্রতিকূল প্রভাব কমানো এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য। ব-দ্বীপ পরিকল্পনা পানি, জলবায়ু পরিবেশ ও ভূমির টেকসই ব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে দেশের স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনাসমূহের সমন্বয় করবে।
এতে পানি নিরাপত্তা এবং পানি ব্যবহারে অধিকতর দক্ষতা অর্জন, সমন্বিত ও টেকসই নদী অঞ্চল এবং মোহনা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, জলাভূমি এবং বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ ও তাদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা, আন্তঃ ও আন্তঃদেশীয় পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর প্রতিষ্ঠান ও ন্যায়সঙ্গত সুশাসন গড়ে তোলা ইত্যাদি কতিপয় সুনির্দিষ্ট অভীষ্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।
একই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকির সম্মুখীন জেলাগুলোকে একেকটি গ্রুপের আওতায় এনে ডেল্টা পরিকল্পনায় মোট ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে।
ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় জাতীয় পর্যায়ের কৌশলের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কিত নির্দিষ্ট এবং পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বিষয়ে বিভিন্ন কৌশল বিবৃত রয়েছে।
এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মোট দেশজ আয়ের ২.৫ শতাংশ অর্থের প্রয়োজন হবে যার মধ্যে প্রায় ২ শতাংশ সরকারি খাত হতে এবং ০.৫ শতাংশ অর্থায়ন বেসরকারি খাত হতে নির্বাহ করতে হবে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী ভাঙন, নদী খনন, নদী শাসন এবং নৌ-পরিবহণসহ নদী ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় হবে মোট বিনিয়োগের ৩৫ শতাংশ।
প্রথম পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ব-দ্বীপ পরিকল্পনার অধীনে ৮০টি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে যার মধ্যে ৬৫টি ভৌত অবকাঠামো সংক্রান্ত এবং ১৫ টি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও দক্ষতা উন্নয়ন এবং গবেষণা বিষয়ক।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় অধিবেশন শুরু হয়। প্রস্তাবিত বাজেট পেশ শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরে তিনি অসুস্থতা বোধ করলে স্পিকারের অনুমতি সাপেক্ষে বাজেট পেশ সম্পন্ন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই বাজেট পাস হবে আগামী ৩০ জুন। আর নতুন অর্থবছর শুরু হবে ১ জুলাই।