উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫/০৫/২০২৪ ৯:১০ এএম

সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে জান্তা বাহিনীর সংঘাতের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের প্রায় ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। চলমান সংঘাতে বেসামরিক লোকজনকে হত্যা ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগের মধ্যে আজ শুক্রবার এমন তথ্য জানান জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয়ের মুখপাত্র এলিজাবেথ থ্রসেল।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এলিজাবেথ থ্রসেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘চলমান সংঘাতের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইনের বুথিডং ও মংডুর কয়েক হাজার বেসামরিক মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নাফ নদীর একটি এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন আনুমানিক ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা।’

রাখাইন সহিংসতার মাত্রা আরও বাড়ার মারাত্মক ও স্পষ্ট ঝুঁকিতে রয়েছে জানিয়ে সতর্ক করে এলিজাবেথ থ্রসেল বলেন, মংডুতে লড়াই চলছে। সেখানে সামরিক বাহিনীর একাধিক চৌকি আছে। এ ছাড়া এলাকাটিতে রোহিঙ্গাদের একটা বড় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাস করে। তিনি বলেন, ‘এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে বেসামরিক নাগরিকেরা আরও একবার হত্যা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটের শিকার হচ্ছেন। তাঁদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা আবারও বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন।’

এলিজাবেথ থ্রসেল বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। এর আগের সহিংসতার সময় বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। তিনি জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ফলকার টুর্ক বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ‘যাঁরা সুরক্ষা খুঁজছেন, তাঁদের তা দেওয়ার’ অনুরোধ করেছেন। একই সঙ্গে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সংহতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর সতর্কতা
মিয়ানমারের সংঘাত পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সতর্ক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও কয়েকটি দেশ। গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো বলছে, ‘সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতার মুখে হাজারো বেসামরিক নাগরিক বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। বেসামরিক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিবদমান সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।’

ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া যৌথ এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড। দেশগুলো বলছে, সহিংসতা বেসামরিক নাগরিকদের জীবনে আরও দুর্দশা ডেকে এনেছে। মিয়ানমারে এসব সহিংসতার সঙ্গে জড়িত সবাইকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারে চলমান এই সহিংসতা নিয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এতে করে দেশটিতে মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও অবনতি এবং দেশজুড়ে মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে এ সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে মিয়ানমারে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধ করা ও নির্বিচার গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে দেশগুলো। সুত্র; প্রথম আলো

পাঠকের মতামত

মার্কিন সহায়তা স্থগিত:থাই হাসপাতাল ছাড়ছে মিয়ানমারের শরণার্থীরা

বিদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে। ইতোমধ্যেই ...

বাংলাদেশেও সব মার্কিন সহায়তা বন্ধ, জানিয়ে দিল ইউএসএআইডি

মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির ব্যয় অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশনা ...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সাথে কাজ করবে ইউএনএইচসিআর

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন যে তার সংস্থা রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান খুঁজে ...

যুক্তরাষ্ট্রের সব বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ করলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করেছেন সদ্য শপথ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ...

নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তদন্ত করবে জাতিসংঘ

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তদন্ত কর‌বে জাতিসংঘ। মিয়ানমারে ...