নিউজ ডেস্ক::
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি জানতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের একটি প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সম্প্রতি বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয়ের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব বরাবর চিঠি পাঠিয়ে ওই আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে বিএনপির বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
দলের স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য ছাড়াও কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতা ওই চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
বিএনপির অন্য একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে অবশ্য জানা গেছে, দলীয় প্রতিনিধিদল জাতিসংঘে না গেলেও ফখরুল শিগগিরই জাতিসংঘের উদ্দেশে রওনা দেবেন। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলেও দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আগামী নির্বাচনে সহায়তা চেয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গত ফেব্রুয়ারি মাসে চিঠি দিয়েছিল বিএনপি। ওই চিঠিতে ‘অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচনের পথে কী কী বাধা রয়েছে তা তুলে ধরার পাশাপাশি খালেদা জিয়ার সাজা-পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতিও ব্যাখ্যা করা হয়েছিল বিএনপির পক্ষ থেকে।
চিঠিতে বলা হয়েছিল, মূলত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা আরেকটি নির্বাচনের পথে অগ্রসর হয়েছে সরকার।
সূত্র মতে, ওই চিঠি ছাড়াও বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘ব্রিফ’ করেছে বিএনপি। সম্প্রতি ঢাকায় কূটনীতিকদের একাধিকবার ডেকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছে দলটি। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির কাছে জাতিসংঘ মহাসচিবের এই চিঠি এলো।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে দুই দফা চিঠি দিয়ে সংলাপে বসার তাগিদ দিয়েছিলেন। একই বছরের ২৩ আগস্ট দুই নেত্রীর সঙ্গে সরাসরি টেলিফোনে কথা বলেও সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন বান কি মুন।
এ ছাড়া তখনকার জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ ওই সময় মোট তিনবার বাংলাদেশ সফর করেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রীর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এ ছাড়া তারানকোর মধ্যস্থতায় ২০১৪ সালের ১০ ও ১১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে মোট তিন দফা বৈঠক হয়েছিল, যা থেকে শেষ পর্যন্ত কার্যকর কোনো ফল বেরিয়ে আসেনি।
দুই নেত্রীর বাইরে বাংলাদেশে একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের মহাসচিবকে জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি দেওয়া বা আমন্ত্রণ জানানোর ঘটনা এই প্রথম। তবে আগের নির্বাচনপূর্ব সময়ের মতো এবার বিএনপির অন্য পক্ষ আওয়ামী লীগকে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, জাতিসংঘের কোনো চিঠির কথা তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, ‘বিএনপি হয়তো অ্যাপয়েনমেন্ট চেয়েছে তাই পেয়েছে। আমরা কেন যাব? আমাদের জবাবদিহি জনগণের কাছে।’