বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম-খুন ও নিপীড়নে জড়িত ছয়শরও বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের নামের তালিকা করেছে বিএনপি। দলটি সারা দেশে তাদের সাংগঠনিক চ্যানেলের মাধ্যমে এই তালিকা তৈরি করেছে বলে জানা গেছে।
গত ২৩ মে দলীয় নেতাকর্মীদের গুম-খুন ও নিপীড়নে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের তালিকা তৈরির জন্য তথ্য চেয়ে জেলা ও মহানগর কমিটিকে দুটি চিঠি পাঠায় বিএনপি।
একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আরেকটিতে স্বাক্ষর করেন দলের মামলা-সংক্রান্ত তথ্য সেলের কন্টাক্ট পারসন সালাউদ্দিন খান। এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে অধিকাংশ জেলার নেতারা তাদের রিপোর্ট কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন। গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ঘোষণার এক দিন আগে বিএনপি এই উদ্যোগ নেয়।
বিএনপি সূত্র জানায়, সারা দেশ থেকে যে তথ্য এসেছে, তা যাছাই-বাছাই করে ছয়শরও বেশি জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, এসপি ক্যাটাগরিতে আছে ৫৫ জন। তালিকায় সেই সব পুলিশ কর্মকর্তার নাম রয়েছে, যারা ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ও তার আগে বিভিন্ন জেলায় দায়িত্বরত ছিলেন।
তালিকার ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, এসপিসহ ৫৫ কর্মকর্তার মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১, সিলেট বিভাগের ৪, ময়মনসিংহ বিভাগের ৪, রংপুর বিভাগের ৮, রাজশাহী বিভাগের ৮ ও খুলনা বিভাগের ৭ জন পুলিশ কর্মকর্তার নাম রয়েছে। এসব কর্মকর্তা ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। এখন এদের সবাই পদোন্নতি পেয়ে পুলিশের বিভিন্ন বড় পদে কর্মরত।
তথ্য সংগ্রহ কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিএনপির এক নেতা জানান, এসব কর্মকর্তা গুম, খুন, হামলা, মামলায় যে জড়িত ছিলেন, তার যথাযথ প্রমাণ কমিটির কাছে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগগুলো যাচাই-বাচাই করার পরই এ তালিকা করা হয়েছে। তারা সবাই কমবেশি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ভোটের অনিয়মে’র সঙ্গে জড়িত।
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপির প্রায় ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। গুমের শিকার হয়েছে ৬০০ নেতাকর্মী। আর সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমাদের অনেক নেতাকর্মী গুম, খুনের শিকার হয়েছে। কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা বের করার জন্য আমাদের দল একটি উদ্যোগ নিয়েছে।’