তীব্র সমালোচনার মুখে বগুড়ায় স্কুলের শিক্ষার্থীর অভিভাবককে পা ধরতে বাধ্য করার অভিযোগে অতিরিক্ত জেলা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয় সংযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) আইন মন্ত্রণালয় থেকে তার বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবককে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠে রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে। পরে এর প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বিষয়টি জানাজানির পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ছাত্রীদের কাছে ঘটনা শোনার পর তাদের স্কুলে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু ছাত্রীরা বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। একপর্যায়ে রাত ৮টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ চলে। পরে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) হেলেনা আকতারসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা বিদ্যালয়ে আসেন।
Movementএই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম সে সময় বলেন, ‘শিক্ষকদের কোনো গাফিলতি ছিল কি-না, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর বিচারকের বিষয়টি জেলা জজকে জানিয়েছি। উনাদের নিয়ম অনুযায়ী উনারা দেখবেন বিষয়টি।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিলুফা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, ছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফলসহ অন্যান্য বিষয়ে ভয়ের কিছু নেই। এ সময় এমন ঘটনায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা হয়রানি করা হবে না বলেও আশ্বাস দেন তিনি। পরবর্তীকালে সবার অনুরোধে মঙ্গলবার রাত সোয়া ৯টার দিকে অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ে ফিরে যান।
এ প্রসঙ্গে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘নিয়মানুসারে সোমবার (২০ মার্চ) জজের মেয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা ছিল। সে প্রথমে অস্বীকৃতি জানালেও পরে কাজটি করে। এ সময় অন্যরা তাকে কটূক্তি করলে বাকবিতণ্ডা ও দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল।’
এ কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে ডাকা হয়েছিল। পরে পা ধরতে বাধ্য করার ঘটনা ঘটে। যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের দাবি, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জেলে পাঠানোর হুমকি দিলে দুই অভিভাবক ভয়ে জজের পা ধরে ক্ষমা চান। তাদের কেউ পা ধরতে বাধ্য করেননি।
পাঠকের মতামত