জন্মের পর নবজাতকের মুখে এক ডোজ মিষ্টান্ন ঘষে দেওয়া অপরিপক্ব বাচ্চাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার কার্যকরী ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এমনটিই বলছেন। নবী করিম (সা.)-এর হাদিসের সঙ্গেও বিশেষজ্ঞদের এই মত মিলে যাচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা জানান, জন্ম নেওয়া অপরিপক্ব ১০টি শিশুর মধ্যে একটির রক্তে শর্করা বিপজ্জনক মাত্রায় কম থাকে। যদি তাদের চিকিৎসা দেওয়া না হয়, তবে শিশুরা স্থায়ী ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। নিউজিল্যান্ডের বিশেষজ্ঞরা ২৪২টি শিশুর ওপর এই চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। তারা বলেন, অপরিপক্ব শিশুদের জন্য এটিই প্রথম চিকিৎসা হওয়া উচিত। নব আবিষ্কৃত এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে বলা হয় ‘জেল থেরাপি’।
অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক জেই হার্ডিং বলেন, ডেক্সট্রোস জেল থেরাপিতে শিশুপ্রতি এক ডলারের মতো খরচ পড়বে। যাতে শিরায় গ্লুকোজ প্রবেশ করানোর চেয়ে কম খরচ পড়বে।
চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে কোনো সুন্নতের পক্ষে গবেষণা থাকুক বা না থাকুক, মহান আল্লাহ যেহেতু রাসুল (সা.)-এর সুন্নতকে আঁকড়ে ধরার আদেশ করেছেন, তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত সুন্নতকে গুরুত্ব দেওয়া।
নবী করিম (সা.)-এর অন্যতম একটি সুন্নত হলো তাহনিক। আবু মুসা (রা.) বলেন, ‘আমার একটি পুত্রসন্তান জন্মালে আমি তাকে নিয়ে নবী (সা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি তার নাম রাখলেন ইবরাহিম। তারপর খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিলেন এবং তার জন্য বরকতের দোয়া করে আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। সে ছিল আবু মুসার সবচেয়ে বড় ছেলে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৪৬৭)
আরেকটি হাদিসে আছে, আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়েরকে মক্কায় গর্ভে ধারণ করেন। তিনি বলেন, গর্ভকাল পূর্ণ হওয়া অবস্থায় আমি বেরিয়ে মদিনায় এলাম এবং কুবায় অবতরণ করলাম। কুবাতেই আমি তাকে প্রসব করি। তারপর তাকে নিয়ে রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে তাকে তার কোলে রাখলাম। তিনি একটি খেজুর আনতে বলেন। তা চিবিয়ে তিনি তার মুখে দিলেন। রাসুল (সা.)-এর এই লালাই সর্বপ্রথম তার পেটে প্রবেশ করেছিল। তারপর তিনি খেজুর চিবিয়ে তাহনিক করলেন এবং তার জন্য বরকতের দোয়া করলেন। (হিজরতের পর) ইসলামে জন্মলাভকারী সেই ছিল প্রথম সন্তান। তাই তার জন্য মুসলিমরা মহা আনন্দে আনন্দিত হয়েছিলেন। কারণ, তাদের বলা হতো ইহুদিরা তোমাদের জাদু করেছে, তাই তোমাদের সন্তান হয় না। (বুখারি, হাদিস : ৫৪৬৯)
ইমাম নববি (রহ.) বলেন, সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে খেজুর দিয়ে তাহনিক করা সুন্নত। অর্থাৎ, খেজুর চিবিয়ে নবজাতকের মুখের তালুতে আলতোভাবে মালিশ করা এবং তার মুখ খুলে দেওয়া, যাতে তার পেটে এর কিছু অংশ প্রবেশ করে।
তিনি বলেন, কিছু আলেম বলেছেন, খেজুর সম্ভব না হলে অন্য কোনো মিষ্টিদ্রব্য দিয়ে তাহনিক করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, সবার কাছেই তাহনিক করা মুস্তাহাব। আমার জানামতে, এ ব্যাপারে কেউ ভিন্ন মত পোষণ করেননি। (শরহে মুহাজ্জাব : ৮/৪২৪)
পাঠকের মতামত