কক্সবাজার জেলার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করেছে স্বেচ্ছাসেবী ও দাতব্য সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সোমবার, ৯ অক্টোবর বেলা ১২ টায় অরুণোদয় অডিটোরিয়ামে শিক্ষার্থীদের মাঝে এই সহায়তা প্রদান করা হয়।
কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ১০০ জন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে এককালীন সহায়তা হিসেবে প্রতিজনকে নগদ চার হাজার টাকা ও এক হাজার টাকার শিক্ষা উপকরণ সহ সর্বমোট পাঁচ লক্ষ টাকার সহায়তা দেওয়া হয়। এতে মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিভিন্ন লেভেলে শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হয়।
বিদ্যানন্দের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা) তাপ্তি চাকমা, অরুণোদয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব শাহ জালাল প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন "বর্তমানে দারিদ্রতা শিক্ষা বিস্তারের প্রধান অন্তরায় নয়, অন্তরায় হচ্ছে সদিচ্ছা। সদিচ্ছা থাকলে সরকারের পাশাপাশি বিদ্যানন্দের মতো অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি তাদের পাশে দাঁড়াবে। তিনি শিক্ষার্থীদের বাল্যবিবাহ, জলবায়ু পরিবর্তন ও সাইবার অপরাধ নিয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন। কাউকে পিছিয়ে রেখে নয় সবাইকে নিয়ে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে আহবান জানান"
অটিস্টিক বাচ্চাদের জন্য "এক টাকার শিক্ষামেলা" নিয়ে তিনি বলেন "স্পেশাল বাচ্চাদের জন্য এ ধরনের আয়োজন খুবই প্রয়োজন। এর মাধ্যমে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি ঘটে। তারা তাদের অগ্রাধিকার বাছাই করতে শিখে, টাকার ব্যবহার শিখে, বাজার কীভাবে করতে হয় তা শিখতে পারছে। এটি বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের অত্যন্ত মহৎ ও ইনোভেটিভ একটি উদ্যোগ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষন কান্তি দাশ তার বক্তব্যে বিদ্যানন্দকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের তাদের পড়াশোনা ও নৈতিক উন্নতি গঠনে আরো মনোযোগী হওয়ার উপদেশ দেন।
বিদ্যানন্দের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জামাল উদ্দিন বলেন- শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে প্রতি বছর বিদ্যানন্দ শিক্ষা বৃত্তি প্রোগ্রাম করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।
দেশ বিদেশে ভিন্নতর ও অভিনব সব আইডিয়া নিয়ে সেবামূলক কাজ করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে বিদ্যানন্দ। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে কেউ যখন ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেনা তখন জীবনবাজি রেখে করোনা মহামারী মোকাবেলায় সম্মুখসমরে যুদ্ধ করে সাধারণ মানুষের ভালবাসা অর্জন করে নেয় এই প্রতিষ্ঠান। সমাজসেবায় তাদের অসামান্য সব অবদানের জন্য ২০২৩ সালে সরকার তাদের একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও ২০২২ সালে সমাজকল্যান মন্ত্রনালয় কর্তৃক জাতীয় মানবকল্যান পদক ও ২০২১ সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কর্তৃক "কমনওয়েলথ পয়েন্টস অফ লাইট" পদকে ভূষিত হয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।