প্রকাশিত: ১৬/০৭/২০১৬ ১১:৪২ এএম , আপডেট: ১৬/০৭/২০১৬ ১২:০৩ পিএম

bidনিউজ ডেস্ক::

জাপান, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের পর উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারের মহেশখালীতে এবার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক পরাশক্তির দেশ চীন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যৌথভাবে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কাজ করবে সে দেশের সেপকো ইলেকট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন। যৌথভাবে তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি খসড়াও তৈরি করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। খসড়ার আলোকে ইতিমধ্যে সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, শিগিগরই চীনের সেপকো করপোরেশনের সঙ্গে যৌথ চুক্তি স্বাক্ষর হবে।

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে এরই মধ্যে জাপানের অর্থায়নে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। এটির পাশেই এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরেকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে সরকার। গত মে মাসে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কম্পানি তেনেগা ন্যাশনাল বারহেড এবং পাওয়ারটেক বারহেড সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মালয়েশিয়ার সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি সই হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া সিঙ্গাপুরের সঙ্গেও এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে চুক্তি সইয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে। চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রই হবে পাশাপাশি।

বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, মহেশখালীতে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়ে গত মার্চে বিদ্যুৎ বিভাগে একটি খসড়া প্রস্তাব জমা দেয় চীনের কম্পানি সেপকো ইলেকট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন। পাশাপাশি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডও আলাদা একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করে। যে খসড়া প্রস্তাবের ওপর গত মাসের শেষ সপ্তাহে বিদ্যুৎ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে জাপান, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের পর চীনের অর্থায়নে মহেশখালীতে আরেকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে সরকার। এটি নির্মাণে ব্যয়ের পরিমাণ এখনো নির্ধারণ হয়নি। তবে ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রকল্পে ঋণ ও ইক্যুইটির অনুপাত হবে ৭০ঃ৩০। অর্থাৎ প্রকল্পের ৭০ শতাংশ বিনিয়োগ করবে সেপকো। বাকি ৩০ শতাংশ করবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। ইক্যুইটি ৭০ শতাংশ থাকবে সেপকোর। এ ছাড়া প্রকল্পে অর্থায়নের ক্ষেত্রে দুই পক্ষই ৫০ শতাংশ করে সভরেন গ্যারান্টির ব্যবস্থা করবে। যৌথ মূলধনী কম্পানিতে (জেভিএ) বাংলাদেশ থেকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেটা মালয়েশিয়ার সঙ্গে করা জেভিএতে করা হয়েছে। সমঝোতার আলোকে, গঠিত যৌথ মূলধনী কম্পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য অর্থায়ন এবং দরপত্র আহ্বান করবে। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। এ ছাড়া ২০৩০ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে ক্ষমতাসীনদের। এর মধ্যে মহেশখালী থেকেই ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ঝুঁকছে সরকার। আর সে জন্য মহেশখালী দ্বীপকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য দরকার বিস্তৃত খালি জায়গা, যেখানে জনবসতি নেই। দরকার হয় কয়লা আনার জন্য সহজ নৌপথ। মহেশখালী দ্বীপ এ দুটির জন্য উপযুক্ত জায়গা। একই সঙ্গে পরিবেশের ক্ষতিও কম হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ ধীরে ধীরে কমে আসছে। সে জন্য সরকার বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। ইতিমধ্যে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ভারতের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। পায়রাতে চীনের সঙ্গে এবং মাতারবাড়ীতে জাপানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। শিগগিরই অন্য দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি সই হবে।

এদিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজও করছে সেপকো করপোরেশন। এ ছাড়া পটুয়াখালীর পায়রা এলাকায় বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। সুত্র: কালেরকন্ঠ

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...