মিয়ানমারের চলমান গৃহযুদ্ধের জেরে দেশটির ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী সেনাবাহিনীর মধ্যে ফাটল ধরেছে। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে অনেকে বিদ্রোহীদের কাছে কৌশলগত তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছে। বাহিনীদে ছদ্মবেশে কাজ করা গুপ্তচরদের কারণে জান্তা সরকার দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, বাইরে থেকে এসব গুপ্তচর সামরিক বাহিনীর প্রতি অনুগত হলেও ভেতরে–ভেতরে কাজ করছেন বিদ্রোহীদের হয়ে, যাদের প্রতীকী রং লাল। ব্যাপারটা এমন বাইরে সবুজ, ভেতরটা টকটকে লাল। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের অনেকেই ‘ওয়াটারমেলন’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন।
Advertisement
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশটিতে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে গণতন্ত্রপন্থি বিদ্রোহীদের লড়াই চলছে। এর মধ্যে গত ১২ মাসে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সেনাবাহিনী। মিয়ানমারের এক–চতুর্থাংশের কম অঞ্চল বর্তমানে তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এরপরও মানুষের জন্য ‘খুবই বিপজ্জনক’ এই জান্তা।
মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের কিয়াও ছদ্মনামের একজন মেজর জানান, সামরিক বাহিনীর নির্মমতা তাকে বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, আমি নির্যাতিত নাগরিকদের লাশ দেখেছি। এটা দেখে আমি চোখের পানি আটকাতে পারিনি। আমরা নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য শপথ নিয়েছি, কিন্তু এখন আমরাই তাদের হত্যা করছি।
গুপ্তচরদের সরবরাহ করা তথ্য বিদ্রোহীদের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সফল হামলা চালাতে সাহায্য করছে।
বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে গুপ্তচরদের ভবিষ্যতে সম্মানিত করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্রোহী নেতা উইন আউং। তিনি বলেন, এই বিপ্লব শেষ হলে, আমরা তাদের সম্মান দিয়ে তাদের পছন্দ অনুযায়ী জীবন গড়তে সাহায্য করব।
বিবিসির পক্ষ থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।