ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৮/০৮/২০২৩ ৯:২৮ এএম

বিয়ে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। প্রথম মানব-মানবী হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর বিয়ের মাধ্যমে এই পবিত্র বন্ধনরীতির প্রচলন হয়। বিয়ে শুধুমাত্র জৈবিক চাহিদা পূরণের নাম নয়; বরং অন্তরের প্রশান্তি ও চরিত্র রক্ষার অনন্য উপায়।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তার এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই মধ্য হতে স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে গিয়ে শান্তি লাভ করো এবং তিনি তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এর ভেতর নিদর্শন আছে সেসব লোকের জন্য, যারা চিন্তা-ভাবনা করে।’ (সুরা রুম: ২১)

সাধারণ অবস্থায় বিয়ে করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা হলেও কোনোসময় তা জরুরি হয়ে যায়। গুনাহে জড়ানোর প্রবল আশঙ্কা হলে বিয়ে করা জরুরি। (ফতোয়া লাজনাদ দায়িমা লিল বুহুসিল ইলমিয়্যা ওয়াল ইফতা: ৯৬২৪)

সক্ষমতা থাকলে দ্রুত বিয়ে করার উৎসাহ দিয়ে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন—‘হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে নেয়। কারণ, বিবাহ চক্ষুকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।’ (বুখারি: ৫০৬৬; মুসলিম: ১৪০০)

প্রশ্ন হলো- বিয়ে করা জরুরি হয়ে গেছে, কিন্তু কোনোভাবেই মা-বাবা বিয়ে দিতে চাচ্ছেন না—এমন পরিস্থিতিতে মা-বাবার অসন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দিয়ে বিয়ে না করা উচিত হবে? নাকি ফরজ-ওয়াজিব আদায়ে নিজেই বিয়ে করে নেওয়া উচিত হবে?

এমন পরিস্থিতিতে ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য হলো- মা-বাবা নিষেধ করলেও স্ত্রীর ভরণপোষণ আদায়ের সক্ষমতা থাকলে বিয়ে করাটা জরুরি। কারণ, আল্লাহর বিধান অগ্রাহ্য করে মা-বাবার সন্তুষ্টি জায়েজ নয়। এক্ষেত্রে মা-বাবার অভিশাপ বা বেয়াদবি ধর্তব্য হবে না।

তবে যদি স্ত্রীর ভরণপোষণে সক্ষমতা না থাকে কিংবা শারীরিকভাবে অক্ষম, তাহলে মা-বাবার কথাকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং তার জন্য বিয়ে করা জায়েজ হবে না।

মনে রাখতে হবে, ছেলে যদি সবদিক থেকে উপযুক্ত হয়, কিন্তু বাবা-মা বিয়ে দিতে সম্মত না হয় তবে গুনাহ থেকে বাঁচতে ছেলের করণীয় হলো- পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের জন্য তাদেরকে রাজি করানোর চেষ্টা করা। পরিবারের সবার সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে যদি বিয়ে হয় তাবে তা নিঃসন্দেহে অতি উত্তম। এতে পারিবারিক সৌহার্দ ও সম্প্রতি অটুট থাকে।

উল্লেখ্য, সন্তান বিয়ের উপযুক্ত হলে মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনের উচিত তাকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা। কেননা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ- ‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যে অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস-দাসীদের বিয়ে দাও।’ (সুরা নুর: ৩২) আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শরিয়তের সকল নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

(তথ্যসূত্র: তিরমিজি: ১৭০৭; মুসনাদে আহমদ: ১০৯৫; মেশকাত: ৩১৩৮; শুআবুল ঈমান: ৬/৪০১; আল বাহরুর রায়েক: ৩/১৯২; ফতোয়ায়ে দারুল উলুম: ৭/৪৩; রদ্দুল মুহতার: ৪/১৫৫)

পাঠকের মতামত

তুরস্কে কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ

ইসলামী ঐতিহ্যের স্মৃতি বিজড়িত তুরস্কে অনুষ্ঠিত ৯ম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ, ...