এক দশের অপেক্ষা, পরতে পরতে শঙ্কা, সমালোচনার তীক্ষ্ম তীর, অসম্ভব-সম্ভবের দোলাচল; অবশেষে হলো সব প্রতীক্ষার অবসান। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। আতশবাজির ঝলকানিতে আকাশ কাঁপিয়ে বিশ্বকে জানান দিয়ে এরপরই পর্দা উঠবে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপের।
ইতিহাসের প্রথম শীতকালিন বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সবার চোখ এখন মধ্যপ্রাচ্যে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে কাতারে। বিশেষ করে ৬০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার আল বায়াত স্টেডিয়ামের দিকে। সেখানেই বাংলাদেশ সময় রাতে সাড়ে ৮টায় শুরু হবে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কি কি থাকছে।
সাধারণত সব আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই সেই দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরা হয় নানা আয়োজনে। এরপর থাকে খ্যাতিমান কিংবা বিশ্বখ্যাত সংগীত শিল্পীদের পারফরম্যান্স। থাকে বিশ্বকাপের থিম সং পরিবেশন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এবারের বিশ্বকাপের থিম সং ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ ইওরস টু টেক’ গাইবেন আমেরিকার শিল্পী লিল ববি। আর থিম সং-এর সঙ্গে নৃত্য করবেন মরোক্কোর নৃত্যশিল্পী মানাল ও রেহমা। তাদের সঙ্গে থাকবেন নোরা ফাতেহিও।
এছাড়া কোরিয়ার জনপ্রিয় ব্যান্ড বিটিএস-এরও সঙ্গীত পরিবেশনা থাকবে। ব্যান্ডটির সদস্য জুং কুক ‘ড্রিমার্স’ গানটি পরিবেশন করবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া আমেরিকার মিউজিক্যাল গ্রুপ ‘ব্ল্যাক আইড পিস’ ও ইংলিশ গায়ক রবি উইলিয়ামসের পারফরম্যান্স করার কথা রয়েছে।
গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল কলম্বিয়ান পপ তারকা শাকিরা ও নাইজেরিয়ান শিল্পী কিজ ড্যানিয়েলও পারফরম্যান্স করবেন। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে স্থানীয় সঙ্গীত শিল্পী ও নৃত্যশিল্পীরা সুযোগ পেতে পারেন পারফরম্যান্স করার। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হবে টুর্নামেন্টের অফিসিয়াল মাসকট লা’ইব। এরপর আতশবাজির ঝলকানিতে শেষ হবে ৪৫ মিনিটের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মাঠে নেমে পড়বে কাতার ও ইকুয়েডরের প্লেয়াররা। এরপর কাতারের আটটি শহরে চলতে থাকবে ২৯ দিন ব্যাপী এই বিশ্বকাপ। যেখানে ৩২টি দল আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বিশ্বসেরা হওয়ার।
গ্রুপপর্বে মোট ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচগুলো শেষে প্রত্যেক গ্রুপ থেকে দুটি করে দল শেষ ষোলোতে উত্তীর্ণ হবে। সেখান থেকে আটটি দল যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে। সেখান থেকে চারটি দল নিশ্চিত করবে সেমিফাইনাল। আর শেষ চার থেকে দুটি দল সুযোগ পাবে ফাইনালে লড়াই করার। ১৮ ডিসেম্বর ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৩২ দলের ৬৪ ম্যাচের ফুটবল মহাযজ্ঞ।