অমনি প্রসেসর যা দিয়ে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, ডিস্টিল্ড ওয়াটার ও অ্যাশ উৎপাদন করা হয়। সেনেগাল ও ভারতের পর এই প্রকল্প পরীক্ষামূলক চালু হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবুল মঞ্জুর বলেন, প্রকল্পটি বাংলাদেশের প্রথম এবং বিশ্বের মধ্যে তৃতীয়। এখানে প্রতিদিন ছয় টন শুকনো পয়োবর্জ্য, পাঁচ টন জৈব ব্যর্জ, পাঁচশ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য পরিশোধন করা যায়। এ থেকে প্রতিদিন ৬০-৭০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়েই মূল প্রকল্পের সকল যন্ত্রপাতি চালু রাখা হয়। এর জন্য জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ বা ভিন্ন কোনো বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না।
বর্জ্য পরিশোধনের মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার লিটারের বেশি ডিস্টিল্ড ওয়াটার উৎপাদন হয় বলে তিনি জানান। ‘ডিস্টিল্ড ওয়াটার’ নামের এই বিশেষ পানি বিভিন্ন কারখানায় ব্যবহৃত হয়। এই পানি বাজারজাত করা যাবে জানিয়ে আবুল মঞ্জুর বলেন, একই সঙ্গে প্রকল্প থেকে প্রতিদিন গড়ে উৎপাদিত হচ্ছে এক-দেড় হাজার কেজি অ্যাশ (ছাই) যা সিমেন্ট তৈরিসহ নানা কাজে ব্যবহার করা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে চুক্তিমতে ভারতের অংকুর সায়েন্টিফিক তার নিজস্ব দক্ষ জনবল দিয়ে প্রকল্পটি পরিচালনা করছে। দুই বছরের মধ্যে অংকুর বাংলাদেশের এসআর করপোরেশনের নিজস্ব লোককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলবে। এরপর প্রকল্পটি এসআরকে বুঝিয়ে দেবে।
গত শনিবার এই প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জরুরি সহায়তা প্রকল্পের অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের অক্টোবর। অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
দেশে-বিদেশে সরকারি-বেসরকারি অন্য যেসব পরিশোধনাগার আছে সেখানে প্লাস্টিক বা নোংরা পানি বা অন্য বর্জ্য আলাদাভাবে পরিশোধন করা যায়। অমনি প্রসেসরের বিশেষত্ব হলো এখানে প্লাস্টিক, নোংরা পানি বা অন্য সব বর্জ্য পরিশোধন করা যায় এবং একই সঙ্গে বিদ্যুৎ, ডিস্টিল্ড ওয়াটার ও ছাই উৎপাদন হয়। ২০১২ সালে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ‘অমনি প্রসেসর’ নিয়ে কাজ শুরু করে। সুত্র: প্রবা
পাঠকের মতামত