পৃথিবীর সব ধর্মেই বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ককে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রয়েছে কড়া নিষেধ। এমনকি এ কাজ যে করবে তার জন্য সামাজিকভাবেও নির্ধারিত রয়েছে কঠিন শাস্তি। আমাদের সমাজে এমন অনেক পুরুষ রয়েছেন যারা শুধু নারীদেহ ভোগ করার উদ্দেশ্যেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং কাজ হাসিল হয়ে গেলে সম্পর্কের দায়ভার নিতে চান না। নারীরাও যে এমন করে না তা নয়, তবে তুলনামূলকভাবে এমন নারীর সংখ্যা কম। আশংকার ব্যাপার হচ্ছে আজকাল অনেক উঠতি বয়সী মেয়েই এই ধরণের শারীরিক সম্পর্ককে আধুনিকতা মনে করে থাকে। অথচ বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের ফলে যে সমস্যা দেখা দেয়, তা পোহাতে হয় নারীদেরকেই! তাই সাবধান হোন এবং জেনে নিন অনাকাঙ্খিত সমস্যাগুলো সম্পর্কে। অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ : বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের সবচেয়ে ভয়াবহ যে সমস্যাটি হতে পারে তা হলো অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ। নিরোধক ব্যবহারের পূর্ব-পরিকল্পনা না থাকা, আবেগের বশে হঠাৎ করেই যৌন সম্পর্ক করা ইত্যাদি এর অন্যতমত কারণ। শারীরিক সম্পর্কের চিহ্ন ধারণ করে সাধারণত মেয়েরাই। গর্ভধারণের যাবতীয় সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয় শুধু মেয়েদেরই। এর ফলে পরিবার, সমাজ এবং নিজের কাছে অপরাধী হতে হয় নারীদের। তাই নারী সাবধান! ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাত : বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের ফলে গর্ভধারণ করে ফেললে তখন গর্ভপাত করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। গর্ভপাত একটি ঝুঁকিপূর্ণ প্রক্রিয়া। এতে যেমন শারীরিক ক্ষতি হয় তেমনি মানসিক ক্ষতির সম্মুখীনও হতে হয়। গর্ভপাতের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণসহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। এর দীর্ঘমেয়াদী কুফলও রয়েছে।প্রথম সন্তান জন্মদানের আগে গর্ভপাতের ঘটনা ঘটলে পরবর্তীতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সন্তান ধারনে সমস্যা দেখা দেয়। জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল ও অন্যান্য ঝুঁকি : বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের কারণে অনেকেই জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করে থাকে। অনবরত জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল গ্রহণ অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ রোধ করলেও ডেকে আনতে পারে মারাত্মক সব সমস্যা। এর মধ্যে অন্যতম হলো সন্তান ধারণের ক্ষমতা হারানো। এছাড়া হরমোনের সমস্যা, মুটিয়ে যাওয়া, খাবারে অনীহা,সন্তান উৎপাদনে অক্ষম হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে। অপ্রাপ্ত বয়সে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর ঝুঁকি : বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে শারীরিক বিষয়াবলির প্রতি আকর্ষণ জন্মায়। ফলে প্রেমের সম্পর্কে কোনো কিছু না ভেবেই শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা তাদের মধ্যে দেখা যায় বেশি। কিন্তু অপরিণত বয়সে শারীরিক সম্পর্কের পরিণতি হতে পারে মারাত্মক। এর ফলে হতে পারে যৌন সংক্রমণ, ক্যানসারের মতো ভয়াবহ সব রোগ। মানসিক ভীতি : বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক মানে প্রথমবারের মতো যৌন সম্পর্ক স্থাপন। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এই কাজটি প্রেমিক যুগলেরা করে থাকে লুকিয়ে, যা পরবর্তীতে একজন নারীর জন্য মানসিক ভীতি বা বিকারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে অনেক ক্ষেত্রেই প্রেমিকেরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক প্রেমিকাকে চাপ প্রয়োগ করে মিলিত হয়ে থাকে। পরে সম্পর্কটি ভেঙে গেলে এসব অনেক মেয়ের ওপর এমন মানসিক চাপ ফেলে, যা ক্রমশ বিকারে রূপ নেয়। বিয়ের পর দাম্পত্যে সমস্যা : বিয়ের আগে প্রেমিকের সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়ালে দাম্পত্য জীবনেও দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। নারীরা হয় স্বামীর অবিশ্বাসের পাত্র। এমনকি প্রেমিকের সাথে বিয়ে হলেও তিনি করতে পারেন নানা রকমের দোষারোপ, করতে পারেন চরিত্র নিয়ে সন্দেহ। দাম্পত্যে আকর্ষণ হারানো : যেহেতু স্বামীর সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই শারীরিক সম্পর্ক থাকে, তাই অনেকেই দাম্পত্য জীবনে হারিয়ে ফেলতে পারেন আকর্ষণ। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের কাছ থেকে নতুন কিছু পাবার থাকে না বলে বিয়ের সম্পর্কে বাজতে পারে ভাঙনের সুর। সামাজিক লাঞ্ছনা : বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের কথা জানা-জানি হলে নারীরা হন নানা রকম লাঞ্ছনা-গঞ্জনার শিকার। সমাজ তাকে অপরাধীর দৃষ্টিতে দেখে। তার জীবন হয়ে ওঠে বিষময়। অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ করলে এবং সেটার কথা জানাজানি হলে ফলাফল হয় ভয়াবহ। মেয়েটি সামাজিকভাবে হয়ে যায় একঘরে। সূত্র : কলকাতা ২৪