নিউজ ডেস্ক::
সব আয়োজন সম্পন্ন। মঙ্গলবার গায়ে হলুদ, বুধবার বিয়ে। বৃহস্পতিবার বরের বাড়িতে বৌভাত।
বিয়ের কার্ড ছেপে বিলি করাও শেষ। উভয়পক্ষের লোকজনের দুই পরিবারে প্রয়োজনীয় যাতায়াতও চলছে।
এরই মধ্যে বিয়ের একটি কার্ড পেলেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রুপালী মন্ডল। হিসাব কষে দেখলেন, ২০০২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জন্ম খাদিজা আক্তার সায়মার। বিয়ের দিন পর্যন্ত তার বয়স ১৫ বছর তিন মাস ৩ দিন।
এরপর যা ঘটল, তাতে সবাই অবাক। ইউএনও’র হাত ধরে বিয়ের আসর থেকে সায়মা স্কুলে গিয়ে বুধবার ক্লাস করেছে। ক্লাস শেষে যথারীতি বাড়িও ফিরেছে সে।
সায়মা কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা ইউনিয়নের টঙ্গীরপাড় গ্রামের আবুল হোসেনের কন্যা ও স্থানীয় নজরুল একাডেমির দশম শ্রেণীর ছাত্রী।
অভিভাবকরা একই উপজেলার পশ্চিম জোড়কানন ইউনিয়নের সুয়ারখিল (জগমোহনপুর) গ্রামের হাজি মো. এছহাক মিয়ার সৌদি প্রবাসী ছেলে মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বুধবার সায়মার বিয়ে ঠিক করেছিলেন।
কিন্তু ওই বিয়ে হয়নি। বিয়ের পিঁড়ির বদলে সায়মাকে স্কুলের ক্লাসে দেখে খুশি রুপালী মন্ডলও।
তিনি জানান, বিষয়টি জানার পর বর ও কনের পরিবারের লোকদের কাছে খবর পাঠানো হয়। মঙ্গলবার উভয়পক্ষের লোকজন এলে বাল্যবিয়ের কুফল ও আইনি বাধা সম্পর্কে তাদের বুঝানো হয়।
ইউএনও বলেন, ‘উভয়পক্ষ তখন তাদের ছেলে-মেয়েকে বিয়ে না দিতে সম্মত হয়।’
এ সময় তিনি কনের বাবার কাছ থেকে মুচলেকা নেন, বুধবার বিয়ের বদলে যেন সায়মাকে স্কুলে দেখতে পান।
জানা গেছে, রুপালী মন্ডলের কথা অনুযায়ী সায়মা বুধবার স্কুলে গেছে এবং ক্লাস করেছে।
অন্যদিকে বরের বাড়ির বৌভাতসহ বিয়ের সব অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুপালী মন্ডল আরও জানান, নজরুল একাডেমিতে গিয়ে সায়মাকে ক্লাসে পেয়েছি। তার লেখাপড়ার খোঁজ-খবর নিয়েছি। সে খুব খুশি এবং মেধাবী। ভবিষ্যতে ভাল ফল করতে চায় সায়মা। তার প্রতি শিক্ষকদের বিশেষ নজর রাখতে বলেছি।
পরে সায়মাকে রুপালী মন্ডল নিজে বাড়ি পৌঁছে দেন।
বরের বাবা হাজি মো. এছহাক মিয়া মুচলেকায় বলেছেন, ১৮ বছরের কোনো মেয়ে ছাড়া তার ছেলেকে বিয়ে তিনি করাবেন না।
পাঠকের মতামত