কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ছনখোলা ঘোনারপাড়ায় যৌতুকের দাবিতে স্বামী এবং তার পরিবারের নির্যাতনে সাকিলা নুর সুমি আক্তার নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার (৩১ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় নিহত সুমি আক্তারের মা সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে অভিযুক্ত স্বামীসহ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে একটি এজাহার দায়ের করেন।
পুলিশ নিহত সুমির শাশুড়ী নুর নাহার বেগমকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।
মামলার এজাহার সূত্রমতে, গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের ছনখোলা ঘোনার পাড়ার এখলাছ মিয়া প্রকাশ বুধাইয়ার পুত্র বোরহান উদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে গৃহবধূ সুমি আক্তারকে মারধর করেন। পরে সুমি আক্তারকে মুমূর্ষ অবস্থায় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমি আক্তার মারা যান। এদিকে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে স্বামী বোরহান উদ্দিন পালিয়ে গেলেও শাশুড়ি নুর নাহার বেগমকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এদিকে ১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের সাকিলা নুর সুমি আক্তারের নামাজে জানাজা ছনখোলা ঘোনার পাড়া সাইক্লোন সেন্টার এর মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
সুমি আক্তারের মা সেলিনা আক্তার জানান, তার বাড়ি ও তার মেয়ে সুমি আকতারের শ্বশুরবাড়ি একই এলাকায়। গত ৫ জুন নিজ বাড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মেয়ে সুমি আক্তার এর সাথে স্থানীয় এখলাছ মিয়ার পুত্র বোরহান উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই পাষণ্ড স্বামী বোরহান উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য সুমিকে প্রতিনিয়ত মারধর করে। অথচ জামাইকে উপহার হিসেবে একটি মোটরসাইকেল ও দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট হননি লোভী স্বামী বোরহান উদ্দিন। লোভি স্বামী বিয়ের কিছুদিন পার মা হতেই যৌতুকের দাবিতে মারধর শুরু করে সুমিকে। এক পর্যায়ে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন স্বামী বোরহান। এক পর্যায়ে যৌতুকের দাবি নিয়ে পরিকল্পিতভাবে সুমির স্বামী এবং স্বামীর পরিবারের লোকজন আমার মেয়ে সুমি আকতার কে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন। আমি আমার মেয়ের হত্যাকাণ্ডের এর সুষ্ঠু বিচার চাই ।
সুমি আক্তারের পিতা শফি উল্লাহ তার মেয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন স্বামী, শশুর এবং শাশুড়ী অমানুষিকভাবে নির্যাতন করেছে।
কক্সবাজার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো: সেলিম উদ্দিন ঘাতক বোরহানউদ্দিনের মা নুর নাহার বেগমকে আটকের বিষয় নিশ্চিত করেছেন। অন্যান্যদের দ্রুত গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
পাঠকের মতামত