প্রকাশিত: ১৫/১১/২০২১ ৯:১০ এএম

যাদের সঙ্গে চিরতরের জন্য বিবাহ অবৈধ, তাদের মাহরাম বা এগানা বলা হয়। এ ছাড়া অন্যদের গায়র মাহরাম বা বেগানা বলা হয়। বেগানা নারী-পুরুষের কোনো নির্জন স্থানে একাকী বাস, কিছুক্ষণের জন্যও লোকচক্ষুর অন্তরালে, ঘরের ভেতরে, পর্দার আড়ালে একান্তে অবস্থান ইসলামে নিষিদ্ধ। কেননা এটি ব্যভিচারের ভূমিকা অবতারণায় সহায়ক হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো পুরুষ যেন কোনো নারীর সঙ্গে একান্তে গোপনে অবস্থান না করে। কারণ শয়তান উভয়ের কুটনি হয়। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১১৭১)

এ ব্যাপারে সমাজে সবচেয়ে বেশি শৈথিল্য পরিলক্ষিত হয় দেবর-ভাবি ও শ্যালিকা-বুনাই, খালাতো বোন, ফুফাতো বোন, মামাতো বোনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে। অথচ তাদের মধ্যে বিপর্যয় ঘটে বেশি। রাসুল (সা.) নারীদের পক্ষে তাদের দেবরকে মৃত্যুর সঙ্গে তুলনা করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৮৫৬)

কাজেই এমন কারো সঙ্গে কোনো কামরা বা স্থানে নির্জনতা অবলম্বন, বাগদত্ত বর-কনের একান্তে আলাপ বা গমন, বন্ধু-বান্ধবীর একত্রে নির্জনবাস, লিফটে কোনো বেগানা যুবক-যুবতীর একান্তে ওঠানামা, ডাক্তার ও নার্সের একান্তে চেম্বারে অবস্থান, টিউটর ও ছাত্রীর একান্তে নির্জনবাস ও পড়াশোনা, স্বামীর অবর্তমানে কোনো বেগানা আত্মীয় বা বন্ধুর সঙ্গে নির্জনবাস, ট্যাক্সিচালকের সঙ্গে বা রিকশায় রিকশাচালকের সঙ্গে নির্জনে গমন, পীর ও নারী মুরিদের একান্তে বায়াত ও তালিম প্রভৃতি একই পর্যায়ের। এমন মানুষের মধ্যে শয়তান কুটনি সেজে অবৈধ বাসনা ও কামনা জাগ্রত করে কোনো পাপ সংঘটিত করতে চেষ্টা করে। (তামবিহাতুল মুমিনাত, ড. সালেহ আল ফাউজান, পৃষ্ঠা ১৬৭-১৬৮)

বারুদের কাছে আগুন রাখা হলে বিস্ফোরণ হতেই পারে। যেহেতু মানুষের মন বড় মন্দপ্রবণ এবং দুর্নিবার কামনা ও বাসনা মানুষকে অন্ধ ও বধির করে তোলে। তা ছাড়া নারীর মধ্যে আছে মনোরম কমনীয়তা, মোহনীয়তা ও চপলতা। আর শয়তান মানুষকে অসৎ কাজে ফাঁসিয়ে দিয়ে আনন্দ বোধ করে থাকে।

অনুরূপ কোনো বেগানা নারীর সঙ্গে নির্জনে নামাজ পড়াও বৈধ নয়। (জামিউ আহকামিন নিসা, মুস্তাফা আল আদাবি : ১/৩৬০)

তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর কাছে নিজের সন্তান দেখতে গিয়ে বা কোনো কাজে গিয়ে তার সঙ্গে নির্জনতাও অনুরূপ। কারণ সে আর স্ত্রী নেই। আর এমন নারীর সঙ্গে বিপদের আশঙ্কা বেশি। শয়তান তাদেরকে তাদের আগের স্মৃতিচারণা করে ফাঁসিয়ে দিতে পারে। (মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ : ২৮/২৭০)

ব্যভিচারে প্ররোচিত হওয়ার আরেকটি ধাপ হলো নারীদের একাকিনী দূরে কোথাও বাইরে যাওয়া-আসা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘নারী যেন এগানা পুরুষ ছাড়া একাকিনী সফর না করে। ’ (বুখারি, হাদিস : ৫২৩৩)

ব্যভিচারের কাছে যাওয়ার আরো এক পদক্ষেপ কোনো এমন নারীর কাছে পরপুরুষের গমন, যার স্বামী বর্তমানে বাড়িতে নেই কিংবা বিদেশে আছে। কারণ এমন নারীর সঙ্গে বিপদ ঘটার আশঙ্কা প্রবল। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সেই নারীর কাছে গমন কোরো না, যাদের স্বামী বিদেশে আছে। কারণ শয়তান তোমাদের রক্তশিরায় প্রবাহিত হয়। ’ (সহিহ তিরমিজি, হাদিস : ৯৩৫)

মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।

পাঠকের মতামত

তুরস্কে কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ

ইসলামী ঐতিহ্যের স্মৃতি বিজড়িত তুরস্কে অনুষ্ঠিত ৯ম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ, ...