দেশের ব্যাংকগুলোতে অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়ে ইঙ্গিত করে হাইকোর্ট বলেছে, সব ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে আমরা কি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবো। এটা কি হয়? এসব অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন যা করছে তাতে মনে হয়, আমরা যেন নাটক দেখছি। হাততালি ছাড়া আর কি আছে, না হয় বসে থাকতে হবে।
আলোচিত বেসিক ব্যাংকের অর্থপাচারের মামলার আসামি মোহাম্মদ আলীর জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানিকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলে।
পরে আদালত দুদকের পক্ষের বক্তব্য শুনতে এবং এ বিষয়ে রায়ের জন্য মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দিন ঠিক করে দেয়।
আদালতে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. জোবায়দুর রহমান। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
শুনানির সময় আইনজীবী মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও দুদক এ মামলায় চার্জশিট দিচ্ছে না। বিচারও শেষ হচ্ছে না। আমার মক্কেল মাত্র একজন কেরানি হিসেবে কাজ করেছেন। এখানে তার অপরাধ কি দুদক সেটিও সুনির্দিষ্ট করতে পারে নাই। মামলায় টাকা ও সম্পদের যে বিবরণ এসেছে সেখানে আমার মক্কেলের নিয়ন্ত্রণে কিছুই ছিল না। এখানে বিশ্বাস ভঙ্গেরও কিছু ছিল না।
এ সময় তিনি বলেন, দুদক দৌড়ায় টাকার পেছনে। দুদক নিজেই দুর্নীতিগ্রস্থ।
তিনি আদালতকে বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে অপরাধ কি সেটাই দুদক শনাক্ত করতে পারে নাই। এ মামলায় এখনও ১০৪ জন আসামি ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অথচ আমার মক্কেল ২০১৯ সাল থেকে কারাগারে আছেন।
এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, আমরা তো মনে হয় নাটক দেখছি। নাটক দেখে হাততালি ছাড়া আর তো কিছু দেয়ার নাই। হয় হাততালি দিতে হবে না হলে বসে থাকতে হবে।
বিচারক বলেন, জজ, আইনজীবী আর যে লাখ লাখ চোখ চেয়ে আছে। কেউ কোনো কাজ করতে পারছেন না। কেন সবাই নিরব। সব ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে আমরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবো। এ সময় বিচারকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, দুদক ড্রামা (নাটক) করছে। আমার বলার কিছু ছিল না।
পরে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতের এসে তার বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য সময় প্রার্থনা করেন। পরে আদালত মঙ্গলবার দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শেষে রায়ের জন্য রাখেন।
পাঠকের মতামত