উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চট্টগ্রাম মহানগরী ও মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক কোনোভাবেই চলতে দেওয়া হবে না। রেজিস্ট্রেশনবিহীন কোনো সিএনজিতে মিটার লাগানো যাবেনা এবং সকল সিএনজিকে মিটারে চলতে হবে। বিভিন্ন মহাসড়কের পাশে অবস্থিত সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস নিতে এখন আরও একঘণ্টা সময় বাড়ানো হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে এ সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
সভায় মন্ত্রী-সিটি মেয়রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, নগরী থেকে বিলবোর্ড যেমন শতভাগ উচ্ছেদ করেছেন- তেমনি এবার নগরীর সড়কগুলো ভালোভাবে সংস্কার করেন।
মন্ত্রী বলেন, এখন থেকে মহাসড়কের পাশে অবস্থিত সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত গ্যাস নিতে পারবে সিএনজি গ্যাসে চালিত গাড়িগুলো। আগে সকাল ৬টা থেকে ৮টা গ্যাস নিতে পারতো। মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলের ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। ঈদের পর মহাসড়কে একের পর এক দুর্ঘটনার কারণগুলো কী, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আগে সবাই বলত, রাস্তা খারাপ। এখন দ্রুতগতির ভালো রাস্তা করে দিয়েছি। দ্রুতগতির রাস্তা পেয়ে চালকেরা যদি নিজেদের দিগ্ বিজয়ী আলেক্সজান্ডার ভাবতে শুরু করে, তাহলে তো সমস্যা। মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলোর উচিত হবে এ বিষয়ে চালকদের ভালো করে কাউন্সেলিং করা।
মন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনাগুলোর কোনোটা চালকের বেপরোয়া গতির জন্য হচ্ছে, কোনোটা হচ্ছে মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচলের জন্য। মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম সিটিতে ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে কোন ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এগুলো বন্ধ না করলে যানজট ও প্রাণহানির ঘটনা বাড়বে।
চট্টগ্রাম সিটিতে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে প্রধান করে ও জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি মেয়রের উদ্দেশ্যে বলেন, কমিটি করার পর আপনারা একবারও মিটিং করেননি। এর আগে মেয়রকে বিলবোর্ড উচ্ছেদের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। সেটি তিনি শতভাগ পালন করেছেন এ জন্য মেয়রকে ধন্যবাদ। আপনি আরো চার বছর ক্ষমতায় থাকবেন বলে আমরা আশা করি। যতদিন দায়িত্বে থাকবেন যশ নিয়ে থাকবেন।
এখন সিটিতে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যে কমিটি করে দেয়া হয়েছে সেটা নিয়ে বৈঠক করে একটা সুষ্ঠু সমাধান বের করার জন্য আমি দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছি। তবে কমিটি গঠনের পর অনেক সময় পার হলেও কোন বৈঠক না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম থেকে যাওয়ার আগে সিটি কর্পোরেশনের একটি বৈঠক করার জন্যও মন্ত্রী মেয়র এবং জেলা প্রশাসককে বলে যান। তিনি বলেন, আপনারা এখনো পর্যন্ত কোন সভা করেননি। কখন করবেন বলেন। আজই সিদ্ধান্ত নিন। পরে ২১ সেপ্টেম্বর গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ও সিএনজি ট্যাক্সি মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত জানান সিটি মেয়র।
মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগে জীবন তারপর জীবিকা। দেশের ২২টি মহাসড়কে সব ধরনের তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর অনেকটাই বাস্তবায়ন করা গেছে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, অনেক সড়কে এসব যান চালানোর জন্য পেছন থেকে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। এখানে রাজনৈতিক মদদও থাকে। আমি বলব, যাঁরা এসব করেন, তাঁরা দেশের ক্ষতি করছেন। মহাসড়কে কোনোভাবেই তিন চাকার যান চলতে দেওয়া হবে না। তবে অসুস্থ রোগীর গাড়ি এবং জানাজায় যাওয়ার ক্ষেত্রে এসব গাড়ি না আটকানোর জন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে এ সুযোগ দিতে হবে।
সভায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক জলিল, জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নূরে আলম, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ উল হাসান, বিআরটিএ চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো.শহিদুল্লাহ ও বিভিন্ন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
-