উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ০১/০৮/২০২৪ ১১:৪৩ এএম

বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার সৈকতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে উপড়ে পড়ছে শত শত ঝাউগাছ। গত ১৫ দিনে কক্সবাজার শহর, ইনানী ও হিমছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত তিন হাজারের বেশি ছোট-বড় ঝাউগাছ উপড়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাম্প্রতিক সময়ে সাগরের পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। বর্ষার মৌসুমে উত্তাল সাগরের উচ্চ জোয়ারে তীর ভাঙছে। তীর রক্ষায় অভিজ্ঞদের মতামত নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা। কক্সবাজার সৈকতে প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত বিভিন্ন পর্যটন পয়েন্ট গত এক দশকে কয়েকবার ভাঙনের মুখে পড়েছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেললেও তা কাজে আসছে না।

কবিতা চত্বর থেকে লাবণি পয়েন্ট পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, সাগরের জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতায় তীরে আছড়ে পড়ছে। ঢেউয়ের চাপে তীর রক্ষায় বসানো জিও ব্যাগগুলো ছিঁড়ে পড়ে আছে। জিও ব্যাগের বাঁধ ছাপিয়ে ঢেউয়ের পানি ঢুকে পড়ছে ঝাউবনে। এতে একে একে ঝাউগাছ উপড়ে পড়ছে। কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ সড়ক। এ সড়কেও পর্যটকদের আলাদা নজর কাড়ে ঝাউবন। সড়কটিরও বিভিন্ন অংশে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ও পাকা ব্লক বসানো হয়েছে।

বুধবার হিমছড়ি এলাকায় দেখা গেছে, বৈরী আবহাওয়ায় সাগরের ঢেউ পাকা ব্লক ছাপিয়ে মেরিন ড্রাইভে আঘাত হানছে। টেকনাফে এ সড়কের কয়েকটি স্থানেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। তিন-চার বছরের মধ্যে হিমছড়ি সৈকতের বালিয়াড়ি বিলীন হয়ে ঢেউ মেরিন ড্রাইভ ছুঁয়েছে। সড়ক রক্ষায় ব্লক বসিয়েও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আলম।

জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী বেলাল হোসেন বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে ডায়বেটিক পয়েন্ট পর্যন্ত সৈকতে এবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে বেশকিছু ঝাউগাছ উপড়ে পড়েছে। ফলে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।

সাগরতীর রক্ষায় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ ন ম হেলাল উদ্দিন

তিনি বলেন, আমাদের বালুকাময় সৈকত রক্ষায় কোন ধরনের উদ্ভিদ লাগানো উচিত, সে বিষয়ে কোনো গবেষণা নেই। বালিয়াড়িতে শুধু যত্রতত্র ঝাউগাছ রোপণ করা হচ্ছে। অথচ এক সময়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া যে উদ্ভিদ ছিল, তা সৈকতের ভাঙন রোধে কার্যকর ছিল।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ সরওয়ার আলম জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাগর দিনদিন উত্তাল হয়ে উঠছে। পানির উচ্চতা বাড়ছে। এর ফলে উচ্চ জোয়ারে কক্সবাজার সৈকতের নাজিরারটেক, ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কবিতা চত্বর, শৈবাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্টসহ বেশ কয়েকটি স্থানে জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক মাসের মধ্যে প্রায় আড়াই শ বড় এবং আড়াই-তিন হাজারের মতো ছোট ঝাউ চারা উপড়ে গেছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিথুন ওয়াদ্দাদার বলেন, ভাঙন রোধে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্প সম্পন্ন হলে ভাঙন রোধের পাশাপাশি ঝাউবন ও বালিয়াড়ি রক্ষা পাবে। এ ছাড়াও ভ্রমণে আসা পর্যটকেরাও স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাফেরা করতে পারবেন

পাঠকের মতামত

বিদ্রোহীদের কাছে কৌশলগত তথ্য ফাঁস করছে মিয়ানমার সেনারা

মিয়ানমারের চলমান গৃহযুদ্ধের জেরে দেশটির ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী সেনাবাহিনীর মধ্যে ফাটল ধরেছে। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে অনেকে বিদ্রোহীদের ...

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবসময় উদারতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ: যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশ সবসময় রোহিঙ্গা সমস্যায় উদারতা দেখিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত বিফ্রিংয়ে এ মন্তব্য করেছেন মুখপাত্র ...

মিয়ানমারের অর্থনৈতিক সংকট: চিকিৎসক ও নার্সরা বাধ্য হচ্ছেন যৌনকর্মে

মিয়ানমারের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংকট এবং সেনা অভ্যুত্থানের ফলে দেশটির শিক্ষিত পেশাজীবী নারীরা চরম আর্থিক সংকটে ...

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসছেন নাসার প্রধান নভোচারী

দেশের তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য ঢাকায় আসছেন নাসার প্রধান মহাকাশচারী জোসেফ ...

মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর থেকে শত শত সেনাসহ জেনারেল আটক

মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহর দখলে নেওয়ার দাবি আগেই করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান ...